শঙ্কর-অধীরের লুকোচুরিতে পিছিয়ে কংগ্রেসের প্রচার

ফ্লেক্স নেই। ফেস্টুন নেই। দেওয়াল লিখনও খুঁজে মেলা ভার। কিছুতেই দানা বাঁধছে না নদিয়ার কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রচার অভিযান। অন্য প্রার্থীদের থেকে কয়েকশো মাইল পিছিয়ে কংগ্রেস প্রার্থী রাজিয়া আহমেদ। তাঁকে মাঝে রেখে কংগ্রেস নেতা শঙ্কর সিংহ ও অধীর চৌধুরীর ‘লুকোচুরি’তেই এমন দশা বলে জানাচ্ছে দলের একাংশ। কৃষ্ণনগরে এখন ছেয়ে গিয়েছে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী তাপস পাল ও বিজেপির ‘জনপ্রিয়’ প্রার্থী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়ের সমর্থনে দেওয়াল লিখন। সিপিএমও মাঠে নেমে প্রচার করছে। সেখানে অনেকটাই পরে দিল্লি থেকে ‘আনকোরা’ প্রার্থী রাজিয়ার নাম ঘোষণা হওয়ায় প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন জেলা সভাপতি শঙ্কর সিংহ। তবে, ২৯ মার্চ কৃষ্ণনগরে বিভিন্ন ব্লকের নেতাদের সঙ্গে প্রার্থীর পরিচয়-বৈঠকে তাঁকে ‘অভিভাবকে’র ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল। সেখানে অধীর ছিলেন না।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:১৭
Share:

চাপড়ায় প্রচারে রাজিয়া আহমেদ। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

ফ্লেক্স নেই। ফেস্টুন নেই। দেওয়াল লিখনও খুঁজে মেলা ভার। কিছুতেই দানা বাঁধছে না নদিয়ার কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রচার অভিযান। অন্য প্রার্থীদের থেকে কয়েকশো মাইল পিছিয়ে কংগ্রেস প্রার্থী রাজিয়া আহমেদ। তাঁকে মাঝে রেখে কংগ্রেস নেতা শঙ্কর সিংহ ও অধীর চৌধুরীর ‘লুকোচুরি’তেই এমন দশা বলে জানাচ্ছে দলের একাংশ।

Advertisement

কৃষ্ণনগরে এখন ছেয়ে গিয়েছে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী তাপস পাল ও বিজেপির ‘জনপ্রিয়’ প্রার্থী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়ের সমর্থনে দেওয়াল লিখন। সিপিএমও মাঠে নেমে প্রচার করছে। সেখানে অনেকটাই পরে দিল্লি থেকে ‘আনকোরা’ প্রার্থী রাজিয়ার নাম ঘোষণা হওয়ায় প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন জেলা সভাপতি শঙ্কর সিংহ। তবে, ২৯ মার্চ কৃষ্ণনগরে বিভিন্ন ব্লকের নেতাদের সঙ্গে প্রার্থীর পরিচয়-বৈঠকে তাঁকে ‘অভিভাবকে’র ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল। সেখানে অধীর ছিলেন না। দিন কয়েক পরে কালীগঞ্জের জামালপুরের কর্মিসভায় অধীর থাকলেও শঙ্করবাবু আসেননি। মঙ্গলবার চাপড়ায় প্রার্থী রাজিয়াকে নিয়ে কর্মিসভা করছেন শঙ্কর সিংহ। সেখানে অধীর নেই। তিনি বুধবার আসছেন কৃষ্ণনগরে। শঙ্করবাবুর থাকার কথা কল্যাণীতে।

এমনটা কেন? অধীর বলেন, “কৃষ্ণনগরে একটা প্রচার কমিটি রয়েছে। যেটা শঙ্কর সিংহ ঠিক করে দিয়েছেন। ওই কমিটিই বলতে পারবে কোন সভায় কাকে ডাকা হয়েছে, কে আসেনি।” আর শঙ্কর সিংহ আজ, কৃষ্ণনগরের কর্মিসভায় আসার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবেন জানিয়ে বলেন, “সভায় কারও থাকা, না-থাকা নিয়ে বিভ্রান্তি থাকার কথা নয়।”

Advertisement

পোড় খাওয়া নেতা মুখে যা-ই বলুন, মঙ্গলবার চাপড়ার সভায় ‘অধীরের প্রার্থী’র সঙ্গে বিশেষ বাক্যালাপে দেখা গেল না তাঁকে। রাজিয়া আধ ঘণ্টা দেরিতে আসেন। একবার কারণ জানতে চান শঙ্করবাবু। মিছিলেও বারবার পিছিয়ে যাচ্ছিলেন। মিছিলের মাঝপথেই চলে যান তিনি।

কংগ্রেসের অন্দরে শঙ্কর-অধীরের বিরোধ-গাথা অজানা নয় কর্মীদের। কিন্তু দলের সঙ্কটের সময়ও দুই নেতা যে ভাবে গোঁ ধরে বসে আছেন, তাতে বিরক্ত কর্মীরা। এমনিতে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে কংগ্রেসের ভিত এখন দুর্বল। মাত্র দু’টি পঞ্চায়েতে একক ভাবে ক্ষমতায় তারা। কোনও পঞ্চায়েত সমিতি দখলে নেই তাদের। জেলা পরিষদের কোনও আসনও নেই। বিধানসভা ভোটের পর থেকে নদিয়ায় একের পর এক কংগ্রেস নেতা তৃণমূলে গিয়েছেন। এখন যাঁরা প্রচারের দায়িত্বে, তাঁদের বেশিরভাগই অনভিজ্ঞ। এক ব্লক সভাপতির কথায়, ‘‘দলের সর্বস্তরে নেতৃত্বের যে অভাব রয়েছে এত তাড়াতাড়ি তা মেটানো বহিরাগত প্রার্থীর পক্ষে অসম্ভব। সেটা দূর করতে পারতেন জেলার পুরনো নেতারা। উল্টে প্রদেশ সভাপতি আর জেলা সভাপতি লুকোচুরি খেলছেন।’’

এরই মধ্যে সম্প্রতি কালীগঞ্জের সভায় অধীর প্রচারের দুর্দশা নিয়ে শঙ্কর-ঘনিষ্ঠ এক নেতাকে প্রকাশ্যে ভর্ৎসনা করায় দলের অন্দরে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। কংগ্রেসের এক ব্লক নেতা বলেন, ‘‘প্রচারের খরচটা কে দেবে? দেওয়াল লেখার জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে যৎসামান্য। এ বার কি পকেটের পয়সা খরচ করে প্রচার করতে হবে?’’ প্রার্থী রাজিয়া বলছেন, ‘‘খুব তাড়াতাড়ি আমরা প্রচারের উপকরণ ব্লকে-ব্লকে পৌঁছে দেব।”

প্রচারের দশা স্পষ্ট হয়ে যায় প্রার্থীর কথাতেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন