হাসপাতালে আহত সৌরভ বিশ্বাস।—নিজস্ব চিত্র।
বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পথে আক্রান্ত হলেন তৃণমূলের এক শিক্ষক নেতা। বুধবার সকালে কৃষ্ণনগরের রাজার দিঘির পাড়ে ঘটনাটি ঘটে। সৌরভ বিশ্বাস নামে ওই শিক্ষককে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সৌরভবাবু কৃষ্ণনগরের লেডিকারমাইকেল প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক। শহরের রাজার দিঘির পাড়ে তাঁর বাড়ি। এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত সৌরভবাবু পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। বুধবার সকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ তিনি মোটর বাইক চালিয়ে স্কুলে আসছিলেন। বাড়ির কাছে দু’জন যুবক তাঁর পথ আটকায়। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সৌরভবাবু বলেন, ‘‘ওরা আমার মাথায় আঘাত করে। আমি বাইক চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করতেই ওরা পিছন থেকে গুলি করে। ওদের আমি চিনতে পারিনি। ওরা কেন যে এমন করল সেটাও বুঝতে পারছি না।’’ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গুলি বা গুলির আঘাতের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি সৌরভবাবুর শরীরে। তবে, মাথায় গভীর ক্ষত রয়েছে। সৌরভবাবুর স্ত্রী নীলিমাদেবীর দাবি, বাড়িতে বসে গুলির শব্দ শুনেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘পরপর দু’টো শব্দ পেলাম। ভেবেছিলাম বাজির শব্দ। কিন্তু বাইরে বেরিয়ে দেখি আমার স্বামীই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কেন যে এমন হল সেটা বুঝতে পারছি না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের এই এলাকায় রাতে তেমন আলো থাকে না। অনেক সময় খারাপ কাজ হয়। আমি বারণ করি। সেই কারণে সমাজবিরোধীরা আমার উপরে রেগে যেতে পারে। কিন্তু তার জন্য আমার স্বামীর উপরে হামলা হওয়ার কথা নয়।” কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানার আই সি রাজকুমার মালাকার বলেন, ‘‘এই হামলার কারণ এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার নয়। তদন্ত শুরু হয়েছে।” প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, ব্যাক্তিগত কোনও আক্রোশ থেকেই এই হামলা। ঘটনার পর হাসপাতালে ছুটে আসেন বেশ কিছু তৃণমূল নেতা-কর্মী। কৃষ্ণনগর পুরসভার পুরপ্রধান তৃণমূলের অসীম সাহা বলেন, ‘‘শহরে সদ্য যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁরাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে আমরা জানতে পারছি।’’ বিজেপি-র জেলা সভাপতি কল্যাণ নন্দী বলেন, ‘‘হাস্যকর অভিযোগ। নিজেদের মধ্যে গোলমালের জেরে ওই ঘটনা ঘটেছে।”