প্রধানমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে স্কুলে স্কুলে শৌচাগার নির্মাণ করতে এগিয়ে এল এনটিপিসি। পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া, মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং ঝাড়খন্ডের কয়েকটি স্কুলে জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতা ছাড়াই এই প্রকল্পে কাজ করবে ফরাক্কা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। এ জন্য ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
সরাসরি ২৪৩০টি স্কুলে শৌচাগার নির্মাণ করে দেবে এনটিপিসি। এর জন্য নির্দিষ্ট মডেলও বানানো হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি শৌচাগারের জন্য ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা খরচ হবে। শুধু নির্মাণই নয়, পরবর্তী দু’বছরে সেই শৌচাগারের রক্ষণাবেক্ষণও করবে নির্মাণকারী সংস্থা। রক্ষণাবেক্ষণর ব্যয় বাবদ শৌচাগার প্রতি ৩৪ হাজার টাকা দেবে এনটিপিসি।
ইতিমধ্যেই কোন কোন স্কুলে এই শৌচাগার নির্মাণ করতে হবে তার তালিকাও ফরাক্কায় পাঠিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। তালিকায় রয়েছে ঝাড়খন্ডের ১৯৬টি, বাঁকুড়ার ১৬২টি স্কুলের নাম। বাকি ২০৭২টি স্কুল মুর্শিদাবাদ ও মালদহের। তালিকায় ফরাক্কার অর্জুনপুর প্রাথমিক, জয়রামপুর প্রাথমিক, নাগরি প্রাথমিক, বিন্দুগ্রাম শিশু শিক্ষাকেন্দ্র, কেন্দুয়া প্রাথমিকের মত অনুন্নত গ্রামের স্কুলগুলিকেই চিহ্ণিত করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে বাঁকুড়া, মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় এ মাসের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। ঝাড়খন্ডে বিধানসভা নির্বাচন থাকায় স্কুলগুলিতে সমীক্ষার কাজ করা যায়নি, এখন সে কাজ শুরু করা হয়েছে। ১৫টি ঠিকাদারি সংস্থাকে ইতিমধ্যেই কাজ শুরুর বরাত দেওয়া হয়েছে। শৌচাগার নির্মাণের পর তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বেও থাকবে তারাই। প্রতিদিন জীবানুনাশক দিয়ে সাফাই, ১৫ দিন অন্তর জলাধার পরিস্কার করা বা প্রতি বছর দেওয়াল ও ছাদের রঙ ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের কাজও তারাই করবে।
স্বচ্ছ ভারত অভিযান প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, দেশের ১.১৪ লক্ষ সরকারি বিদ্যালয়ে বালিকাদের জন্য কোনও শৌচাগার নেই। ১.৫২ লক্ষ স্কুলে শৌচাগার নেই বালকদেরও। অনেক স্কুলে শৌচাগার থাকলেও তা অকেজো হয়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ওই সব স্কুলগুলিতে শৌচাগার নির্মাণের আবেদন জানিয়েছেন। সেই আবেদনের ভিত্তিতে এনটিপিসি সারা দেশে ১৮টি রাজ্যের ৫৭টি পিছিয়ে থাকা জেলায় ৮১৫২টি এই শৌচাগার তৈরি করে দেবে।
ফরাক্কা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মানব সম্পদ বিভাগের সহকারি জেনারেল ম্যানেজার মিলন কুমার বলেন, “মুর্শিদাবাদ জেলার বহু স্কুলেই এখনও শৌচাগার নেই। এ নিয়ে একটি তালিকা পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ মন্ত্রক। প্রধানমন্ত্রীর স্বচ্ছ ভারত অভিযানের ডাকে সাড়া দিয়েই এনটিপিসি ওই সব স্কুলে শৌচাগার নির্মাণের কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। ফরাক্কা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ২৪৩০টি শৌচাগার গড়বে স্কুলগুলিতে। টেন্ডার ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে।”
এছাড়া, ফরাক্কা সংলগ্ন ১৪টি গ্রামে এখন থেকে দেড় মাস অন্তর এনটিপিসির চিকিৎসকরা যাবেন। বয়স্কদের চিকিৎসা করে বিনা পয়সায় সমস্ত রকম ওষুধ দেবেন তাদের। প্রয়োজনে তাদের হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থাও করে দেবেন। মিলনকুমার জানান, কর্পোরেট সেক্টর হিসেবে এলাকার উন্নয়নে গত বছর ৫.৮৭ কোটি টাকা খরচ করেছিল ফরাক্কা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এ বছর তা বাড়িয়ে ৯.১৬ কোটি টাকা করা হয়েছে।