সাংস্কৃতিক উৎসবে মজে মুর্শিদাবাদ

শীতের আমেজে মুর্শিদাবাদ মজে আছে মেলার মজায়। কোথাও সাহিত্যবাসর, তো কোথাও সারা বাংলা কবিতা কার্নিভাল। কোথাও পুস্তক প্রকাশ অনুষ্ঠান, তো কোথাও নাট্যোৎসব। রয়েছে আবৃত্তি-শ্রুতি নাটকের উৎসবও। তবে এরই মাঝে প্রায় ১০৮ বছর পর ফের বহরমপুর শহর সংস্কৃতি সংশ্লিষ্ট একটি ইতিহাস তৈরি করতে চলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৩
Share:

শীতের আমেজে মুর্শিদাবাদ মজে আছে মেলার মজায়। কোথাও সাহিত্যবাসর, তো কোথাও সারা বাংলা কবিতা কার্নিভাল। কোথাও পুস্তক প্রকাশ অনুষ্ঠান, তো কোথাও নাট্যোৎসব। রয়েছে আবৃত্তি-শ্রুতি নাটকের উৎসবও। তবে এরই মাঝে প্রায় ১০৮ বছর পর ফের বহরমপুর শহর সংস্কৃতি সংশ্লিষ্ট একটি ইতিহাস তৈরি করতে চলেছে। ১৯০৭ সালের ৩-৪ নভেম্বর বহরমপুর শহরের কাশিমাবাজারে মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দীর প্রাসাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে দু’দিন ধরে প্রথম বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তার পর এ পর্যন্ত বহরমপুর শহরে দু’ দিন ধরে কোনও সাহিত্য-আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে কি না তা এ শহরের স্মরণে নেই। ১০৮ বছর আগের স্মৃতি উসকে দিয়ে ২৩-২৪ জানুয়ারি রাজ্যের কবি ও সাহিত্যকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সারা ‘বাংলা কবিতা কার্নিভাল’। উদ্যোক্তা বহরমপুর ‘বাংলার কথামুখ’।

Advertisement

দু’দিনের ওই অনুষ্ঠানটি চলছে বহরমপুর বাস টার্মিনাসের ‘সুভাষ কক্ষ’-এ। কথামুখের সম্পাদক সমীরণ ঘোষ বলেন, “২৩ জানুয়ারি দুপুর ২টোয় উৎসবের উদ্বোধন করেন সাংসদ অধীর চৌধুরী। দ্বিতীয় দিন, শনিবার ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা নদী বিশেষজ্ঞ জয়া মিত্র, বাংলাদেশের কথাকার জাকির তালুকদার ও গল্পকার রবিশঙ্কর বলের। উৎসবে অংশগ্রহণ করবেন রাজ্যের ও রাজ্যের বাইরের দই শতাধিক কবি-সাহিত্যিক।” কবিতাপাঠ, আলোচনা, সংগীত, শ্রুতিনাটক ছাড়াও প্রথম দিন সাহিত্য ও সংবাদ সংক্রান্ত ২ টি সংস্থা এবং শিক্ষা-সাহিত্য-সংগীত-সংস্কৃতি জগতের ৫ জন কৃতীকে এ জেলার প্রয়াত ৭ বিদ্বজনের নামে স্মৃতি-সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। দ্বিতীয় দিনের উৎসব মঞ্চ থেকে জয়া মিত্র ও জাকির তালুকদারের আলোচনা ছাড়াও কাব্যগ্রন্থ ও পত্রিকা মিলে বেশ কয়েকটি পুস্তকের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হবে।

এ বছরের ২৩ জানুয়ারি আরও বেশ কয়েকটি কারণে মুর্শিদাবাদ জেলার সাংস্কৃতিক মানচিত্রে বিশেষ জায়গা করে নিল। কথাকার নীহারুল ইসলাম সম্পাদিত ‘খোঁজ’ পত্রিকা গোষ্ঠী বাংলাদেশের কথাকার জাকির তালুকদারকে ‘রফিকুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার ২০১৫’ সম্মানে ভূষিত করে। লালগোলার এম এন আকাডেমির বিজ্ঞান ভবনের ওই অনুষ্ঠানে ‘রফিকুল ইসলাম স্মারক বক্তৃতা’ দেন সাহিত্যিক জয়া মিত্র। জাকির তালুকদারের সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করেন রবিশঙ্কর বল। এ দিনই মুর্শিদাবাদের নাট্য আন্দোলনের মুকুটে আরও একটি কৃতিত্বের পালক সংযোজন করল বহরমপুরের নাট্যসংস্থা ‘ঋত্বিক’। ‘ঋত্বিক’-এর উদ্যোগে বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে ২৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হল ‘নাটকে চট্টগ্রাম’ নাম দিয়ে ৩ দিনের নাট্যোৎসব। রবীন্দ্রনাথের ‘রক্তকরবী’ ও ‘বিসর্জন’ এবং সোফোক্লসের ‘ইডিপাস’ মিলে ৩টি নাটকই মঞ্চস্থ করবে চট্টোগ্রামের ‘তির্যক নাট্যদল’। বড়ঞার পাঁচথুপিতে ২৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হল সাহিত্যবাসর। উদ্যোক্তা ‘পাঁচথুপি নাগরিক সমাজ’। এ দিন কান্দির হ্যালিফক্স মাঠের অস্থায়ী মঞ্চে অভিনীত হল ৩টি একাঙ্ক নাটক। ২৩ জানুয়ারি অবশ্য কান্দির ‘রাখালিয়া নাট্যগোষ্ঠী’ আয়োজিত ৪ দিনের সারা বাংলা নাট্যোৎসবের তৃতীয় দিন ছিল। ২২ জানুয়ারি মঞ্চস্থ হয়েছে ৩টি নাটক। ২৪ জানুয়ারি নাট্যোৎসবের সমাপ্তি সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হবে কলকাতার সায়কের প্রযোজনা ‘দামিনি হে’। ওই দিনই বহরমপুরে প্রকাশিত হবে আইনজীবী খন্দেকার আব্দুল মগনির লেখা দু’টি গ্রন্থ ফুলের সৌরভ-প্রেমের পরশ’ ও ‘উই আর ওয়ান নেশন’। তার একদিন পর ২৬ জানুয়ারি বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে শুরু হবে ‘বাচিক শিল্পচর্চার মুক্ত দিগন্ত’ আয়োজিত ২ দিনের ‘আবৃত্তি-শ্রুতি নাটক উৎসব’।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন