শিক্ষণীয়! রঘুনাথগঞ্জের শ্রীকান্তবাটী হাই স্কুলে মারপিটে জড়িয়ে পড়লেন শিক্ষকেরা। নিজস্ব চিত্র
প্রাতঃকালীন বিভাগ চালু রাখা নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে বচসা ও হাতাহাতির ঘটনায় সোমবার মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেল রঘুনাথগঞ্জের শ্রীকান্তবাটী হাইস্কুল। অন্য দিকে, চোখের সামনে শিক্ষকদের মারামারিতে জড়িয়ে পড়তে দেখে মুখ দিয়ে কথা সরছে না ছাত্রছাত্রীদের।
স্কুল সূত্রের খবর, প্রায় ৩৯০০ ছাত্র ছাত্রী রয়েছে ওই স্কুলে। তাদের বসার স্থান নিয়ে সমস্যা মেটাতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির ১১০০ ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সকালে পৃথক ক্লাস চালু করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওই স্কুলে ৬০ জন শিক্ষক রয়েছেন। সেই মত রুটিন তৈরি করে প্রাতঃ ও দিবা বিভাগে যথারীতি ক্লাস চলছিল। প্রধান শিক্ষক উৎপল মণ্ডল জানান, কিছুদিন আগে কয়েকজন শিক্ষক সকালে ক্লাস বন্ধ রাখার দাবি করেন। সেই মতো সোমবার থেকে প্রাতঃকালীন ক্লাস বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাতে কিছু অভিভাবক প্রতিবাদ জানান। পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য এ দিন শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিয়ে আলোচনায় বসেন পরিচালন সমিতি। তখনই শিক্ষকদের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে সকালে ক্লাস করা নিয়ে তুমুল বচসা বেঁধে যায়। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ হাতাহাতিও শুরু হয়। বাধ্য হয়ে স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক প্রণব পাল বলেন, “৩৯০০ ছাত্রকে বসতে দেওয়ার মতো পরিকাঠামো নেই স্কুলে। সেই কারণেই প্রাতঃকালীন বিভাগের সিদ্ধান্ত। এখন কিছু শিক্ষক নানা কারণ দেখিয়ে তাতে বাধা দিচ্ছেন।” তিনি আরও বলেন, “ ছাত্রছাত্রীদের সামনেই শিক্ষকদের মধ্যে বচসা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বাধ্য হয়ে বিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
এ দিকে, কথা কাটাকাটি থেকে শিক্ষকদের হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় হতবাক পড়ুয়ারা। বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র রনি শেখ বলে, “সকালে ক্লাস হওয়ায় আমাদের বসা ও লেখার খুব সুবিধা হচ্ছিল। কিন্তু তাই নিয়ে স্যারেরা মারামরি করবেন ভাবিনি।” দশম শ্রেণির ছাত্র অর্জুন মণ্ডলের কথায়, “প্রথমে স্যারেদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল। কিছুক্ষণ পরে তাঁদের মধ্যে হাতাহাতি বেঁধে যায়। বাধ্য হয়ে আমরা ক্লাস থেকে বেরিয়ে আসি।” নিজেরাই যদি একটা সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন তাহলে ছাত্রছাত্রীদের শেখাবেনটা কী সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবকদের কেউ কেউ।