তেমন পুরনো হয় হবিবপুরের রথযাত্রা। তবু জমে উঠেছে উৎসব। সমন্বয় আর সম্প্রীতির আবহে সপ্তাহব্যাপী এই উৎসব আজ শেষ উল্টোরথে।
শ্রীধাম নীলাচলে জগন্নাথ মন্দিরে সকলের প্রবেশাধিকারের পক্ষে কথা বলেছিলেন শ্রীচৈতন্য। পুরীর মন্দিরে আজও নাকি দেখা যায় তাঁর হাতের ছাপ। আর নদিয়ার রানাঘাটে হিন্দু দেবতা জগন্নাথের রথ যাত্রায় অনায়াসে যোগ দেন ভিন্ন জাতের নৌসাদ আলি বা আবু তাহের মণ্ডলরা। গত রবিবার হবিবপুরের ইস্কন গৌরধাম মন্দির থেকে রথযাত্রার সূচনা হয়। বছরে একবার শ্রীমন্দির ছেড়ে জগন্নাথ সপরিবারে বের হন। শোভাযাত্রা এসে পৌঁছয় রানাঘাটের স্বাস্থ্যোন্নতির ময়দানে। এখানেই মাসির বাড়ি।
গৌরধাম মন্দিরের কীর্তন দাস মহারাজ জানান গত সাত দিন এই ময়দানেই বিশেষ পুজো হয় যথাবিহিত রীতিতে। জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাদেবীর বিবিধ সাজ হয় এই ক’দিনে। কোনওটির নাম বৃন্দাবন বেশ, তো কোনটি পুষ্প বেশ, কোনটি আবার পদ্ম বেশ নামে পরিচিত। ভোগ দেওয়া হয় ৫৬ রকমের। তবে শুধু দেবতারাই নন। প্রসাদ পেয়েছেন ভক্তরাও। দর্শনার্থীর ভিড়ে উপচে পড়েছে ময়দান। পার্শ্ববর্তী জেলা থেকেও মানুষ এসেছেন। সেখানে জাতি-ধর্মের কোনও ভেদ নেই।
নিত্যসেবা থেকে রথযাত্রাসর্বত্রই বজায় সম্প্রীতি। গৌরমন্দিরের শ্যামরূপ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, “মায়াপুরের আবু তাহের মণ্ডলের কথা সবার আগে বলতে হয়। ভিন্ন জাতের মানুষ, কিন্তু আন্তরিকতার কোনও অভাব নেই। মন্দির নির্মাণ থেকে শুরু করে অর্থ সংগ্রহ করা, এমনকী রথ তৈরির কাজেও তিনি হাত লাগান।” বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের উপস্থিতিতে ইস্কনের এই রথযাত্রা আজ বিশ্বভ্রাতৃত্বের উজ্জ্বল নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়েছে।