হয়রান করতে নারদ-তদন্ত নয়: হাইকোর্ট

কলকাতা পুলিশ তোলাবাজির একটি মামলায় ইতিমধ্যে ম্যাথুর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। সেই মামলায় নারদ-প্রধানকে জেরাও করা হয়েছে কয়েক দফায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৭ ০৩:০২
Share:

স্টিং অপারেশনের তদন্তের নামে সিবিআই জনপ্রতিনিধিদের নাজেহাল করছে বলে রাজনৈতিক শিবিরের একটি অংশ-সহ বিভিন্ন মহলের অভিযোগ। কলকাতা হাইকোর্ট শুক্রবার জানিয়ে দেয়, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের হয়রান বা বিব্রত করতে নারদ স্টিং অপারেশন নিয়ে সিবিআই-কে তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি। ‘‘জনপ্রতিনিধিদের উপরে নাগরিকদের বিশ্বাস যাতে কোনও ভাবে ক্ষুণ্ণ না-হয়, তা দেখাই মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল ডিভিশন বেঞ্চের,’’ বলেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী।

Advertisement

এ দিন নারদ মামলার শুনানিতে বিচারপতি বাগচী একই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, যিনি স্টিং অপারেশন চালিয়েছিলেন, নারদ নিউজের সেই কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েল কোনও ভুল তথ্য দিয়ে থাকলে ফৌজদারি আইনে তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া যায়। ম্যাথুর ওই অপারেশনের ভিডিও ফুটেজে দেখানো হয়েছে, সাংসদ, বিধায়ক-সহ রাজ্যের শাসক দলের কিছু নেতা প্রচুর টাকা নিয়েছেন। সেই বিষয়ে তদন্তে নেমে সিবিআই বিভিন্ন দিনে অভিযুক্তদের তলব করছে, জেরা করছে দীর্ঘ ক্ষণ। অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ কেউ অভিযোগ অস্বীকার করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।

যেমন তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার এবং বিধায়ক ও কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদ। নারদ মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের দায়ের করা এফআইআর খারিজের আবেদন জানিয়ে বিচারপতি বাগচীর আদালতে মামলা ঠুকে দিয়েছেন ওই দুই নেতানেত্রী। ইকবালের আইনজীবী অমিত দেশাই এ দিন আদালতে দাবি করেন, যে-ভাবে প্রতি মুহূর্তে প্রযুক্তির উন্নতি হচ্ছে, তাতে কোনও ছবিকে বিকৃত করা যেতেই পারে। ইদানীং প্রযুক্তি ও সোশ্যাল মিডিয়ার যথেচ্ছ অপব্যহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ওই আইনজীবী। তাঁর বক্তব্য, সিবিআইয়ের উচিত ছিল, ম্যাথুর পেশ করা নথি আরও ভাল করে যাচাই করে তার পরে এফআইআর করা। এই সওয়াল শুনেই বিচারপতি বাগচী বলেন, ‘‘কেউ ভুল তথ্য দিয়ে থাকলে তাঁর বিরুদ্ধেও ফৌজদারি কার্যবিধিতে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।’’

Advertisement

কলকাতা পুলিশ তোলাবাজির একটি মামলায় ইতিমধ্যে ম্যাথুর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। সেই মামলায় নারদ-প্রধানকে জেরাও করা হয়েছে কয়েক দফায়। সিবিআইয়ের আইনজীবী মহম্মদ আসরাফ আলি এ দিন বিচারপতি বাগচীর কাছে একটি ই-মেলের নথি পেশ করে জানান, ম্যাথু তদন্তকারী সংস্থার কাছে কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ তাঁকে নারদ-তদন্তে সিবিআইয়ের সঙ্গে সহযোগিতা করতে নিষেধ করছে। আদালত বিষয়টি দেখুক।

তা শুনে বিচারপতি বাগচী বলেন, ‘‘আমি এই ব্যাপারে কোনও নির্দেশই দেব না। ম্যাথু আদালতে কোনও আবেদন করেননি। সিবিআই-ও কোনও আবেদন করেনি। ম্যাথুকে নিরাপত্তা দেওয়া হবে কি না, সেটা সিবিআইয়ের বিচার্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন