নারদ সংক্রান্ত মামলা নিয়ে শুক্রবার সরগরম ছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এ দিন নারদ নিউজের কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলের আইনজীবী ফের হলফনামা দিয়ে জানান, তাঁর মক্কেল ব্যক্তিগত ভাবে আদালতে হাজিরা দেওয়ার ক্ষেত্রে নিরাপদ বোধ করছেন না। ভিডিওটি জাল কি না, তা কোনও এজেন্সিকে দিয়ে পরীক্ষা করানোর অনুরোধও জানান তিনি। ঘুষ কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলার শুরুতেই মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই বিষয়ে তদন্তের জন্য আদালত যেন কোনও নির্ভরযোগ্য এজেন্সিকে তদন্তের দায়িত্বভার দেয়।’’
হলফনামায় ভিডিও টেপ কলকাতায় নিয়ে গেলে সেটিরও ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন স্যামুয়েল। এরই পাশাপাশি, আদালত নির্দেশ দিলে তিনি দিল্লিতে অবস্থিত কোনও তদন্ত সংস্থার হাতে ওই টেপ তুলে দিতে পারেন বলেও জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়ন্ত গুপ্ত বলেন, ‘‘নারদ-কর্তাকে ভিডিও টেপটি তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি তা করেননি। স্যামুয়েল কেন প্রাণহানির ভয় পাচ্ছেন, সেই সম্পর্কেও স্পষ্ট ভাবে হলফনামায় কিছু বলা হয়নি।’’ পুলিশকর্তা সৈয়দ মির্জার আইনজীবী কিশোর দত্ত পাল্টা বলেন, ‘‘ম্যাথু স্যামুয়েলের হঠাৎ এই ধারণা কেন হল, তা স্পষ্ট ভাবে জানানো উচিত ছিল।’’
আদালতের তরফে বলা হয়, স্যামুয়েলের কাছে স্টিং অপারেশন করার উদ্দেশ্যটা ঠিক কী, তা জানতে চাওয়া হলেও তিনি কোনও কিছুরই উল্লেখ করেননি এই হলফনামায়। ম্যাথুর আইনজীবী বলেন, ‘‘আগামী ১৫ এ্রপ্রিলের মধ্যে সমস্ত তথ্য জমা দিয়ে দেওয়া হবে।’’ বিমলবাবুর এই কথা শোনার পরেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সুর চড়িয়ে বলেন, ‘‘আগেই হলফনামায় সম্পূর্ণ তথ্য জমা দেওয়া ছিল।’’ এর পরেই হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর অসন্তোষ জানিয়ে বলেন, ‘‘স্যামুয়েল হলফনামায় বলেছেন ২০১৬ সালে কোম্পানি তৈরি হয়েছে। তার আগে ভিডিও তোলা হয়েছিল। কোন প্রেক্ষাপটে নারদ কোম্পানিটি তৈরি করা হয়েছিল সে ব্যাপারে কিছুই জানানো হয়নি। এমনকী, সেই সব ভিডিও মোবাইল নাকি ভিডিও ক্যামেরায় তোলা হয়েছিল, সেটিরও উল্লেখ নেই হলফনামায়।’’ কল্যাণবাবু আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘ম্যাথু স্যামুয়েল দিল্লির কোনও এজেন্সিকে দিয়ে তদন্ত চাইছেন। কিন্তু আমার ধারণা তাতে তদন্তের গতিপ্রকৃতি বিপথে চালিত হবে।’’ সব শেষে প্রধান বিচারপতি জানান, এখন আদালতের মূল উদ্দেশ্যই হল জনগণের আস্থা ফেরানো। সত্যি কী ঘটেছিল তা মানুষের সামনে নিয়ে আসা। আলোয় আসুক সম্পুর্ণ ঘটনা।