খালি চোখে বাঘের দেখা মিলেছে। নজর-ক্যামেরার লেন্সেও ধরা দিয়েছিল সে। কিন্তু তাতেও কপাল খুলছে না নেওড়াভ্যালির। রাজ্যের বন দফতরের খবর, ব্যাঘ্র প্রকল্পের শিরোপার বদলে আপাতত জাতীয় উদ্যানের তকমা নিয়েই খুশি থাকতে হবে উত্তরবঙ্গের এই অরণ্যকে।
সংরক্ষণবিদেরা বলছেন, বাঘের আবাস হিসেবে নেওড়াভ্যালির মতো এলাকা সত্যিই বিরল। তার উপরে বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু বদলের প্রভাব সেখানকার বাঘের উপরে পড়ছে কি না, তা জানা জরুরি।
জাতীয় পশু সংরক্ষণের জন্য ‘প্রজেক্ট টাইগার’ নামে একটি প্রকল্প রয়েছে কেন্দ্রের। সুন্দরবন ও বক্সা আছে সেই প্রকল্পের অধীনে। তাই তারা নানা অনুদান পায়। ৮৮ বর্গকিলোমিটারের নেওড়াভ্যালি সেই তকমা পেলে তারও পরিকাঠামো এবং পরিবেশ উন্নয়নে বরাদ্দ বাড়ত।
বনকর্তারা জানাচ্ছেন, উত্তরবঙ্গের একাধিক জঙ্গলে বাঘ ছিল। কিন্তু এখন নেই। ব্যাঘ্র প্রকল্প বলে স্বীকৃত বক্সাতেও বাঘের দেখা মেলেনি দীর্ঘদিন। নেওড়াভ্যালিতে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গেলেও বাঘের দেখা মিলছিল না। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে এক গাড়িচালক লাভার কাছে বাঘের দেখা পেয়ে ছবি তুলে বন দফতরে পাঠান। পরে ক্যামেরা-ফাঁদেও বাঘের দেখা মেলে। ফলে নেওড়ার বাঘ নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে।
‘‘নেওড়াভ্যালিকে যাতে ব্যাঘ্র প্রকল্প হিসেবে ঘোষণা করা হয়, সেই জন্য কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর আবেদন জানিয়ে ২০১২-’১৩ সালে আমি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলাম। ব্যাঘ্র প্রকল্প ঘোষণা হলে সংরক্ষণ গুরুত্ব এবং পর্যটন বাড়ত। পর্যটনের হাত ধরে ওই এলাকার বাসিন্দাদেরও উন্নতি হত,’’ বলেন রাজ্য ওয়াইল্ড লাইফ বোর্ডের সদস্য জয়দীপ কুণ্ডু।
রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিংহ জানান, ব্যাঘ্র প্রকল্পের তকমা পেতে গেলে জঙ্গলের মাপ যা হওয়া জরুরি, নেওড়াভ্যালি তার তুলনায় অনেকটাই ছোট। ফলে সেই নিয়মেই নেওড়াভ্যালি বাধা পাচ্ছে।