সিবিআই সদর দফতর। ফাইল চিত্র।
ছ’মাসের মধ্যে বড় মাপের বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তদন্ত গুটিয়ে আনতে চায় সিবিআই। তাই চলতি বছরের শুরুতে জনা বাইশেক নতুন অফিসারকে পাঠানো হচ্ছে সংস্থার কলকাতার আর্থিক অপরাধ-৪ বা ‘চিটফান্ড’ ব্রাঞ্চে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শুধুমাত্র অর্থলগ্নি সংস্থার তদন্ত করতে ২০১৩ সালে এই শাখা তৈরি করেছিল সিবিআই। সংস্থা সূত্রের খবর, এই অফিসারদের মাথায় ফেব্রুয়ারিতে আসতে চলেছেন আরও একজন সিনিয়র অফিসার। তাঁদের হাতে বাছাই করা পাঁচটি অর্থলগ্নির সংস্থার চার্জশিট দেওয়া হবে। ওই সব সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ‘প্রভাবশালী’দের নামও তাতে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সিবিআই সূত্রের খবর।
সংস্থার এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যে সিবিআই তদন্তের ‘জেনারেল কনসেন্ট’ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ফলে কেন্দ্রীয় কর্মীদের দুর্নীতির মামলা করার সুযোগ কমে গিয়েছে। আর্থিক অপরাধের ক্ষেত্রেও রাজ্যের সম্মতি ছাড়া এখন সিবিআই সরাসরি মামলা করতে পারছে না। ফলে ওই সব শাখার সিনিয়র অফিসারদের ‘চিটফান্ড ব্রাঞ্চ’-এ বদলি করা হয়েছে।’’
ওই মুখপাত্র জানান, সিবিআই সম্প্রতি ১০০ জন নতুন সাব-ইন্সপেক্টর নিয়োগ করেছে। প্রশিক্ষণ পর্বের পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাঁদের পাঠানো হয়েছে। কলকাতায় ‘চিটফান্ড ব্রাঞ্চে’ এসেছেন ২২ জন নতুন অফিসার। ২৫ জন গিয়েছেন মুম্বই। এক শীর্ষ কর্তার দাবি, ‘‘এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে তদন্তকারী সংস্থার অগ্রাধিকারে কী রয়েছে।’’ ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ‘চিটফান্ড ব্রাঞ্চ’-এর নতুন অফিসও তৈরি হয়েছে।
কয়েক মাস আগে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ থেকেও পাঁচ জন সাব-ইন্সপেক্টর এবং ইন্সপেক্টর ডেপুটেশনে সিবিআইয়ে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু গত ছ’মাস তাঁদের কোনও কাজ দেওয়া হয়নি। এখন সেই অফিসারদের দিল্লিতে সিবিআইয়ের নিজস্ব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তদন্তের পদ্ধতি শেখাতে পাঠানো হচ্ছে। এক কর্তার কথায়, ‘‘তাঁরা যে কৌশলে কাজ করে এসেছেন, বাংলার পুলিশ থেকে আসা অফিসারদের আগে তা ভোলাতে হবে। এর পরে সিবিআইয়ের তদন্ত কৌশল শেখাতে হবে।’’ প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদেরও অর্থলগ্নি সংস্থার তদন্তে লাগানো হবে বলে জানা গিয়েছে।
এই শাখার প্রধান ফণীভূষণ করণ আগামী ৩১ জানুয়ারি অবসর নিতে চলেছেন। ফেব্রুয়ারিতেই ‘চিটফান্ড ব্রাঞ্চ’ নতুন প্রধান পাবেন বলে সংস্থা সূত্রের খবর। তার পরে, আগামী তিন মাসের মধ্যে অন্তত তিনটি বড় মামলার চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ করা হতে পারে বলে সিবিআই সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে।