প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি নিয়ে কিছু দিন আগে মন্তব্য করে পরে তা অস্বীকার করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে বুধবার তিনি আবার জানিয়ে দিলেন, নবনিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা আগামী ১০ বছর বদলি হতে পারবেন না।
টেট-জটের পাশাপাশি শিক্ষকদের বদলি নিয়েও বিতর্ক চলছে। এ দিন বিধানসভায় নিজের ঘরে সেই প্রসঙ্গ তুলে শিক্ষামন্ত্রী জানান, নিজের জেলায় শূন্য পদ না-পেয়ে অনেকে ধরাধরি করে অন্য জেলায় নিয়োগের সুযোগ পেয়ে গিয়েছেন বলে বিস্তর অভিযোগ উঠছে। যাঁদের হস্তক্ষেপে ওই সব প্রার্থী অন্যত্র নিয়োগপত্র পাচ্ছেন, তাঁরাই দ্রুত ওই শিক্ষকদের নিজের জেলায় বদলি করে আনার আশ্বাস দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ। এটা আটকানোর জন্যই অন্তত ১০ বছর বদলি না-করার বন্দোবস্ত হচ্ছে। তার জন্য বদল করা হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলির নিয়মবিধিও।
প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে এখনও যে-সমস্যা আছে, পনেরো দিনের মধ্যে তার সমাধান হয়ে যাবে বলে এ দিন বিধানসভায় আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে তা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদে জানালে খতিয়ে দেখা হবে।’’
শিক্ষামন্ত্রী পরে হিসেব দেন, প্রায় চার হাজার ৪১ জন প্রার্থীর নিয়োগ নানা কারণে আটকে রয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে জট ছাড়ানোর কাজ শেষ হবে। মন্ত্রী জানান, ১০৬৭ জন এমন প্রার্থী আছেন, যাঁরা আবেদনপত্রে নিজেদের পার্শ্বশিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা আদতে তা নন।
এ দিন বিধানসভায় শিক্ষা বাজেটের আলোচনায় টেট-স্বচ্ছতা নিয়ে অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, টেট-তদন্তে সিবিআই-কে ডাকা হোক। শাসক দলের বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী তখন বলেন, ‘‘টেটের স্বচ্ছতা নিয়ে সংশয় নেই। সিবিআই কেন, এফবিআই-কে দিয়েও আপনারা (বিরোধীরা) তদন্ত করাতে পারেন!’’ শিক্ষামন্ত্রী তার পরেই মন্তব্য করেন, কে কে চাকরি পাবে, বামফ্রন্টের আমলে সেটা ঠিক হতো পার্টি অফিসে। এখন টেট হয়।
তিন বার তথ্য যাচাইয়ের পরেও যে পার্শ্বশিক্ষক নিয়ে ধোঁয়াশা থেকে গিয়েছে, তার দায় জেলা স্কুল পরিদর্শকদের ঘাড়েই চাপিয়ে দেন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর কথায়, তথ্য যাচাইয়ে কোনও ভুল হয়ে থাকলে সেটা হয়েছে জেলা স্তরেই। ‘‘জেলা স্কুল পরিদর্শক, স্কুল পরিদর্শক, সহ জেলা স্কুল পরিদর্শকের পদ থাকার দরকার কী? ওঁরা তো নিজেদের কাজটাই করেন না,’’ মন্তব্য করেন পার্থবাবু। তিনি জানান, কিছু জেলা স্কুল পরিদর্শককে সরানো হয়েছে। আরও সরানো হবে।