তিনি অরণ্যদেব নন, ফলে ম্যাজিকের মতো সব সমস্যার সমাধান করতে পারবেন না! তবে সকলকে নিয়ে চলাই হবে তাঁর লক্ষ্য। জার্মানি থেকে ফোনে বললেন বিশ্বভারতীর নবনিযুক্ত উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
প্রায় আড়াই বছর বিশ্বভারতীর স্থায়ী উপাচার্যের পদ খালি পড়ে ছিল। গত সংসদীয় অধিবেশনের শেষ দিনে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের নামের তালিকার ফাইলটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দেন মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। আচার্য প্রধানমন্ত্রী নিজেই ওই নাম চূড়ান্ত করে পাঠিয়ে দেন রাষ্ট্রপতির কাছে। জাভড়েকরের আশা, ‘‘স্থায়ী উপাচার্য পেয়ে নিশ্চয়ই আরও সহজে বিশ্বভারতীর অগ্রগতি সম্ভব হবে। বিদ্যুৎবাবুর জন্য আমার শুভেচ্ছা রইল!’’
বিদ্যুৎবাবু জার্মানিতে অধ্যাপনা ও গবেষণার কাজ শেষ করে দেশে ফিরবেন পুজোর পর। বিশ্বভারতীর দায়িত্ব নেওয়ার প্রসঙ্গে বললেন, ‘‘এটুকু বলতে পারি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা কোনও উপাচার্য একক ভাবে সমাধান করতে পারেন না। চাই যৌথ নেতৃত্ব। সবাইকে নিয়ে চলাই হবে আমার মূল মন্ত্র।’’ প্রধানমন্ত্রী তাঁর উপরে যে আস্থা রেখেছেন, সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে চান তিনি।
বিদ্যুৎবাবু বলেন, ‘‘রাজনীতি-নিরপেক্ষ ভাবে প্রশাসন চালাতে চাই। রবীন্দ্রনাথের মানবতাবাদী দর্শনই হবে চলার পাথেয়।’’ তাঁর মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল— এক দিকে বিশ্ববাজারে শিক্ষাক্ষেত্রের প্রবল প্রতিযোগিতার মুখে বিশ্বভারতীর মানোন্নয়ন। অন্য দিকে, আধুনিক হতে গিয়ে শান্তিনিকেতনের সাবেকি ঘরানা বিসর্জন না দেওয়া।
বিদ্যুৎবাবু নিজে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করেছেন। বিদেশেও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাঁর মতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শাসনের পরিবর্তে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে সমপর্যায়ে নেমে এসে চিন্তাধারা আদান-প্রদান করতে পারলে গুরু-শিষ্য পরম্পরা রক্ষা করা সম্ভব। বিদ্যুৎবাবু বলেন, ‘‘এই জন্য প্রতিটি বিষয়ে আমি সকলের সঙ্গে আলোচনা করে এগোতে চাই। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সহযোগিতা একান্ত ভাবে কাম্য।’’ সেই প্রসঙ্গেই যোগ করলেন, ‘‘আমি তো অরণ্যদেব নই যে শান্তিনিকেতনে গিয়েই একদম ম্যাজিকের মতো সব সমস্যার সমাধান করে দেব!’’