সমাহার: ভিড় ঠেলে কেনাকাটা। হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
ভাইফোঁটা মানেই হরেক রকম মিষ্টি।
বছরের এই একটা দিনের কথা মাথায় রেখে মিষ্টি বিক্রেতারাও নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান ছানা, দুধ, ক্ষীর, ফল, সব্জির উপরে। এ বছর অবশ্য জিএসটির ‘খোঁচা’ রয়েছে মিষ্টির দামে। তাতে অবশ্য মিষ্টির চাহিদা এতটুকুও কমেনি।
মিষ্টিতে পরিবর্তন এসেছে অনেক। বিভিন্ন রাজ্যের মিষ্টি তৈরির উপকরণকে নিজেদের মতো করে ব্যবহার করছেন এ রাজ্যের বিক্রেতারা। আগে জলভরা আর ছাঁচের সন্দেশে বড় বড় করে ‘ভাইফোঁটা’ লেখা থাকত। এখন রসগোল্লা, ল্যাংচা, চমচমের মতো চেনা মিষ্টির থেকে বেরিয়ে ‘থিম’ মিষ্টির বাজার।
গোলাপ, চামেলি, জুঁই, হাসনুহানার গন্ধের পাশাপাশি ভেষজ রং, চকলেট, ভ্যানিলা ক্রিম, জাফরানের পুরে আরও সরেস হচ্ছে মিষ্টি। এ বার ভাইফোঁটার বাজারে পছন্দের তালিকার প্রথম দিকে রয়েছে ক্ষীর, জাফরান, কাজু, কিসমিসের পুরে ভরা শকুন্তলা সন্দেশ, অরেঞ্জ ক্রাশ। মালাই শিঙাড়া হচ্ছে চকোলেট, নলেন গুড় দিয়ে। মধুর পুরে তৈরি হয়েছে মধু সন্দেশ। ক্রেতাদের মন রাখতে রয়েছে নোনতা স্বাদের মিষ্টিও।
এক দোকানদার জানালেন, নাম বাহারি না হলে মিষ্টির দর ওঠে না। তাই ককটেল মিষ্টির কোনওটার নাম লিচি মুড, কোনওটা আবার স্টর্ম সন্দেশ, ক্যান্ডিড সুইট। ক্ষীর ও আমের নির্যাস দিয়ে তৈরি হচ্ছে ম্যাঙ্গো জিলাটো সন্দেশ। ভাইয়ের মন ভরাতে তৈরি ব্লু বেরি, হট চকলেট দইও।
চন্দননগরের সূর্য মোদক বা পানিহাটির প্রমথনাথের নাম ডাক ছিল। হালফিলে শ্যামনগর, ব্যারাকপুর, বেলঘরিয়ার কিছু মিষ্টির দোকান নতুন ধরণের মিষ্টি এনেছে ভাইফোঁটায়। শ্যামনগরের নিউ সরকার সুইটস-এর মালিক জয়ন্ত সরকার বলেন, ‘‘প্রথাগত মিষ্টি হারিয়ে যাচ্ছে। সবাই নতুনত্ব চাইছেন। আমরাও তাই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে নানা স্বাদের মিষ্টি বানানোর চেষ্টা করছি।’’ ব্যারাকপুরের অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভাইফোঁটার আচার অনুষ্ঠান তো সাবেক। মিষ্টিতে অন্তত থিম থাক।’’