অসমে গ্রেফতার ‘জেহাদি’ শাহনুর

খাগড়াগড় বিস্ফোরণে অন্যতম অভিযুক্ত অসমের শাহনুর আলম অবশেষে পুলিশের জালে পড়ল। এর আগে বার দুয়েক পুলিশের হাত ফস্কে পালিয়েছিল সে। পুলিশ সূত্রে খবর, আজ সন্ধ্যায় তাকে নলবাড়ি জেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গুয়াহাটির স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের সদর দফতরে এনে জেরা করা হচ্ছে তাকে। শাহনুরের হদিস পেতে পাঁচ লক্ষ টাকা ইনাম ঘোষণা করেছিল এনআইএ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি ও ধুবুরি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৫
Share:

খাগড়াগড় বিস্ফোরণে অন্যতম অভিযুক্ত অসমের শাহনুর আলম অবশেষে পুলিশের জালে পড়ল। এর আগে বার দুয়েক পুলিশের হাত ফস্কে পালিয়েছিল সে। পুলিশ সূত্রে খবর, আজ সন্ধ্যায় তাকে নলবাড়ি জেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গুয়াহাটির স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের সদর দফতরে এনে জেরা করা হচ্ছে তাকে। শাহনুরের হদিস পেতে পাঁচ লক্ষ টাকা ইনাম ঘোষণা করেছিল এনআইএ।

Advertisement

খাগড়াগড় বিস্ফোরণের তদন্তে নেমে এনআইএ জানতে পেরেছিল, অসম থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন মাদ্রাসায় এসে জেহাদের প্রশিক্ষণ নিত অনেক তরুণ-তরুণী। সেই সূত্রেই উঠে আসে শাহনুর আলম ওরফে ‘ডাক্তার’-এর নাম। এনআইএ সূত্রে খবর, গোয়ালপাড়া থেকে দাঁতের ডাক্তারি শিখে বরপেটার চটলা গ্রামে চিকিৎসা করত শাহনুর। আড়ালে সে, তার স্ত্রী সুজানা বেগম ও ভাই জাকারিয়া জামাত-উল-মুজাহিদিনের হয়ে কাজ করত। বিদেশ থেকে আসা হাওয়ালার টাকা শাহনুর এ রাজ্যে নিয়মিত পাঠাত বলে গোয়েন্দারা জানতে পারেন। তার স্ত্রী শিমুরালির মাদ্রাসায় প্রশিক্ষণ নিয়ে চটলার মাদ্রাসায় মেয়েদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিত বলেও জানা যায়।

বর্ধমান বিস্ফোরণে অসমের যোগসূত্র মেলার পরেই দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে চটলার বাড়ি ছেড়ে পালায় শাহনুর। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে সে বাবা মুজিবর আলমের বাড়িতে ওঠে। পরে নলবাড়ির মুকালমুয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়ি ৮টি বাক্সে সমস্ত নথিপত্র পুঁতে রেখে পালায়। বরপেটা নলবাড়ি থেকে জেহাদি যোগের অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

৬ নভেম্বর রাতে গুয়াহাটির বাস টার্মিনাস থেকে দেড় বছরের সন্তান-সহ ২২ বছরের সুজানাকে ধরে পুলিশ। তাকে জেরা করে মুকালমুয়ায় শাহনুরের আত্মীয়ের বাড়িতে পুঁতে রাখা নথির হদিস মেলে। মাঝে শাহনুরকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে তার সম্পর্কিত দুই ভাইকে গ্রেফতার করেও পরে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

এর পরে এক বার মেঘালয়, আর এক বার ধুবুরির নামাসেরসো গ্রামে পুলিশ হানা দিলে হাত ফস্কে পালায় শাহনুর। দিন কয়েক আগে পুলিশ খবর পায়, মুকালমুয়ার লারকুচি গ্রামে ৪ দিন ধরে শাহনুর গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। গোয়েন্দাদের কাছে যে ছবি ছিল তাতে শাহনুরের দাড়ি ছিল। কিন্তু মুকালমুয়ায় গা ঢাকা দেওয়া ব্যক্তির দাড়ি ছিল না। তাই সে শাহনুর কি না, নিশ্চিত হতে দিন দুই সময় নেয় পুলিশ। এ দিন সন্ধ্যায় অসম পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের বিশেষ অপারেশন ইউনিট ওই গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

এর আগে যে ভাবে শাহনুর দু’বার নজর এড়িয়ে পালিয়েছিল এবং গুয়াহাটির পাশেই নলবাড়িতে লুকিয়ে ছিল, তাতে পুলিশের সন্দেহ, এলাকারই কারও সমর্থন সে পেয়েছে। তাকে গ্রেফতারের পরে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন