প্রতীকী ছবি।
অভিযুক্তের সংখ্যা কম নয়। কিন্তু চার্জশিট দেওয়া যাচ্ছে কোথায়!
বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে এ পারে ঢুকেছে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় টাকার জাল নোট। সেই কারবার ঠেকাতে পশ্চিমবঙ্গে এ-যাবৎ জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র রুজু করা ছ’টি মামলায় অভিযুক্ত বাংলাদেশি নাগরিকের সংখ্যা ১০। তবে তাদের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া গিয়েছে মাত্র এক জনের বিরুদ্ধে। অথচ তদন্তে নতুন নতুন বাংলাদেশির নাম উঠছে। যেমন দারুল শেখ।
ও-পারে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে এসে একটা থলে এ-পারে ফেলে দেয় দারুল। রাতের অন্ধকারে, ও-পারে যেখানে বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশের নজরদারি নেই, এ-পারে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পাহারা নেই— সেই সব জায়গাতেই চলে এই কারবার। থলের মধ্যে ভরা থাকে জাল নোট।
দারুল এ ভাবে দু’বছর ধরে মালদহের বৈষ্ণবনগর এলাকার শুকদেবপুরের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে জাল নোট পাচার করেছে বলে অভিযোগ। বাড়ি তার চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ এলাকার ঝুরিতলা গ্রামে। তার সব তথ্য পেতে মরিয়া এনআইএ।
গত বছর ৩১ মার্চ বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ নাসির শেখ নামে এক যুবককে ন’লক্ষ ৮০ হাজার টাকার জাল নোট-সহ গ্রেফতার করে। ৪ অগস্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে তদন্তভার নেয় এনআইএ। এনআইএ সম্প্রতি নাসিরকে হেফাজতে পাওয়ার পরেই দারুলের নাম সামনে এসেছে। জাল নোটের মামলায় এনআইএ যে-সব বাংলাদেশিকে খুঁজছে, দারুল সেই তালিকায় নবতম সংযোজন।
কিন্তু এখানেও সেই প্রশ্ন। চার্জশিট দেওয়া যাবে কি না। এখনও পর্যন্ত এনআইএ শুধু একটি মামলায় এক জন বাংলাদেশির বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে পেরেছে। তার নাম হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিল শেখ। গত ২৮ এপ্রিল কলকাতার এনআইএ আদালতে ওই চার্জশিট জমা পড়েছে। এটা ২০০৫ সালের ১২ মে মালদহের সুজাপুর গ্রামে ন’লক্ষ টাকার জাল নোট উদ্ধারের মামলা। সে-বছর ৬ মে মালদহের দৌলতপুর গ্রামের কাছে ৬৪ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধারের মামলায় ন’জনের বিরুদ্ধে এ বছর ৫ মে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। তবে ওই মামলায় অভিযুক্ত দুই বাংলাদেশি মানারুল ওরফে কালু শেখ ও ডালিম শেখের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে পারেনি এনআইএ। কালিয়াচকের একটি মামলায় আপেল শেখ নামে অন্য এক বাংলাদেশি অভিযুক্ত। এ ছাড়া আরও পাঁচ বাংলাদেশি মামলাগুলিতে অভিযুক্ত বলে এনআইএ-র দাবি।
এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘যথেষ্ট আদালতগ্রাহ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেই ওই বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া যাচ্ছে না।’’