গ্রেফতার হলেও জঙ্গি-চাঁই আনোয়ার হোসেন ফারুক জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ-র আওতার বাইরেই থেকে গেল। তবে পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর হাতে ধরা পড়া জামাত-উল-মুজাহিদিন বা জেএমবি-র পাঁচ সদস্যকে নিজেদের হেফাজতে পেয়েছে এনআইএ।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা জানায়, হেফাজতে পাওয়া পাঁচ অভিযুক্তের নাম মহম্মদ ইউসুফ, আবুল কালাম, মহম্মদ রফিক, শহিদুল ইসলাম ও জবিরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতের বিচারক কল্লোলকুমার দাস ওই পাঁচ জনকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত এনআইএ-র হেফাজতে রাখার অনুমতি দিয়েছেন। বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বছর দুই আগেকার বিস্ফোরণের ঘটনায় অভিযুক্ত ইউসুফ ও কালামের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে এনআইএ।
অসমের বাসিন্দা রফিক, উত্তর-পূর্ব ভারতে জেএমবি-র প্রধান শহিদুল এবং বাংলাদেশি নাগরিক জবিরুলের নাম চার্জশিট নেই। তবে ওই তিন জনও খাগড়াগড় মামলায় ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ছিল।
২৪-২৫ সেপ্টেম্বর কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স ওই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। ৬ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরাও করে কলকাতা পুলিশ। তার পরে তাদের জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। জামাতের ওই পাঁচ জঙ্গিকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য এনআইএ ৯ অক্টোবর আদালতে লিখিত আবেদন করে। তার ভিত্তিতেই এ দিন ওই পাঁচ জনকে জেল থেকে আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের এনআইএ-র হেফাজতে পাঠিয়ে দেন।
সরকারি কৌঁসুলি তমাল মুখোপাধ্যায় ও সঞ্জয় বর্ধন এ দিন আদালতে অভিযোগ করেন ধৃত রফিক, শহিদুল ও জবিরুল আদতে বাংলাদেশের বাসিন্দা। ইউসুফ ও কালামদের সঙ্গে তো বটেই, জঙ্গি সংগঠন জেএমবি-র অনেকের সঙ্গে দেশ জুড়ে নাশকতার ছক কষেছে তারা। আইনজীবীরা জানান, খাগড়াগড় কাণ্ডে অভিযুক্ত ন’জন জঙ্গি এখনও ফেরার। ওই ন’জনের হদিস পাওয়ার জন্যও এই পাঁচ অভিযুক্তকে জেরা করা জরুরি।
অভিযুক্তদের হয়ে এ দিন কোনও আইনজীবী আদালতে দাঁড়াননি। বিচারক সরকারি আইনজীবীদের বলেন, ‘‘রাজ্যের উচিত অভিযুক্তদের জন্য আইনজীবী নিয়োগ করা। লিগ্যাল এড সার্ভিসের মাধ্যমে আইনজীবী নিয়োগ করুন।’’
বাংলাদেশের যুবক আনোয়ার হোসেন ফারুক পশ্চিমবঙ্গে জেএমবি-র মাথা। ওই পাঁচ জনের সঙ্গে প্রায় একই সময়ে ধরা পড়লেও তাকে কব্জায় পায়নি এনআইএ। কারণ, বাংলাদেশে বিভিন্ন হামলায় সে অভিযুক্ত হলেও এ-পার বাংলার খাগড়াগড় বিস্ফোরণে অভিযুক্তের তালিকায় তার নাম নেই। এতে যে তাদের বেশ সমস্যা হচ্ছে, এনআইএ সূত্রে তা জানানো হয়েছে।