মুসার দ্রুত বিচারে মামলা দু’ভাগে উদ্যোগী এনআইএ

পশ্চিমবঙ্গে রুজু হওয়া ইসলামিক স্টেট বা আইএস সংক্রান্ত প্রথম ও এখনও পর্যন্ত একমাত্র মামলায় প্রধান অভিযুক্তের বিচার দ্রুত শুরু করতে উদ্যোগী গোয়েন্দারা। তাই মামলাটি দু’ভাগে ভাগ করে তাঁরা এগোতে চাইছেন। এই মর্মে আদালতে আবেদনও করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)।

Advertisement

সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩৯
Share:

পশ্চিমবঙ্গে রুজু হওয়া ইসলামিক স্টেট বা আইএস সংক্রান্ত প্রথম ও এখনও পর্যন্ত একমাত্র মামলায় প্রধান অভিযুক্তের বিচার দ্রুত শুরু করতে উদ্যোগী গোয়েন্দারা। তাই মামলাটি দু’ভাগে ভাগ করে তাঁরা এগোতে চাইছেন। এই মর্মে আদালতে আবেদনও করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)।

Advertisement

ওই মামলার প্রধান অভিযুক্তের নাম মহম্মদ মসিউদ্দিন ওরফে মুসা। বীরভূমের ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলতে খাস মার্কিন মুলুক থেকে এফবিআই (ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)-এর গোয়েন্দারা শহরে এসেছিলেন। মুসার সঙ্গে কথা বলে যায় বাংলাদেশ পুলিশও। মুসা এখন জেলে। এনআইএ-র আইনজীবী শ্যামল ঘোষ বলেন, ‘‘ওই একই মামলায় মুসা ছাড়া আরও দুই অভিযুক্ত আছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়নি, তদন্ত এখনও চলছে। ইতিমধ্যে ওই দু’জন জামিনে ছাড়াও পেয়ে গিয়েছে।’’

তদন্তকারীদের মতে, মুসা আইএস সদস্য। কিন্তু বাকি দুই অভিযুক্ত আমিন শেখ ওরফে শেখ আব্বাসউদ্দিন ও সাদ্দাম হোসেন ওরফে কালোকে তা বলা যাবে না। ওরা কেবল মুসাকে চিনত। এনআইএ-র এক কর্তার কথায়, ‘‘ওই দু’জনের বিরুদ্ধে আমাদের তদন্ত শেষ হয়নি। তাই, চার্জশিট দেওয়া যায়নি।’’ মুসার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ হয়ে যাওয়ায় তার দ্রুত বিচার করতে চাইছেন তদন্তকারীরা। মুসার বিরুদ্ধে গত ২৩ ডিসেম্বর কলকাতার এনআইএ আদালতে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। শ্যামলবাবুর কথায়, ‘‘বাকি অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে যাতে শুধু মুসার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়, সেই জন্য আমরা আদালতে আবেদন জানিয়েছি। ২৩ ফেব্রুয়ারি এই ব্যাপারে শুনানি হওয়ার কথা।’’

Advertisement

এনআইএ-র আশা, চার্জ গঠন করা গেলে মামলাটিও দু’ভাগে ভাগ হয়ে যাবে, অন্য দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আর একটি নতুন মামলা রুজু করে তদন্ত হবে। সেই পৃথক তদন্তের কোনও প্রভাব মুসার বিচারের উপরে পড়বে না। অর্থাৎ ওই তদন্তের জন্য মুসার বিচার আটকে থাকবে না। তদন্তকারীদের দাবি, কলকাতার মাদার হাউসের সামনে হামলা চালিয়ে সেখানে যাতায়াত করা বিদেশি নাগরিকদের হত্যার ছক কষেছিল মুসা। ভারতের দায়িত্বে থাকা আইএস-এর শীর্ষনেতা শফি আরমারের সঙ্গে মুসার নিয়মিত ফেসবুক, স্কাইপে যোগাযোগ ছিল। শ্রীনগরে গিয়ে মুসা আইএসের নিশান উড়িয়ে এসেছে। এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, ‘‘মুসার মতো জঙ্গির বিচার দ্রুত শুরু করা প্রয়োজন। সেই জন্য আমরা চাইছি, মূল মামলাটি থাকুক মুসার বিরুদ্ধে। নতুন মামলা বাকিদের বিরুদ্ধে রুজু করা হোক।’’

গত বছরের ৪ জুলাই বর্ধমান স্টেশন থেকে মুসাকে ধরা হয়। একই সময়ে বীরভূমের আমোদপুর স্টেশনে ধরা পড়ে মুসার দুই সঙ্গী আমিন এবং কালো। তাদেরও বাড়ি বীরভূমের লাভপুরের রেজিস্ট্রি অফিসপাড়ায়। তদন্তে জানা যায়, মুসা-ই তাদের আমোদপুর স্টেশনে অপেক্ষা করতে বলেছিল। লাভপুরের একটি বাগানবাড়ির মালিক তথা কলকাতার এক প্রোমোটার ও তাঁর দেহরক্ষীকে গলা কেটে খুন, সেই বাড়ির পরিচারিকাকে গণধর্ষণ করে মোবাইল ফোনে গোটা ঘটনার ভিডিও তুলে ওয়েবসাইট মারফত তা গোটা দুনিয়ায় ছ়ড়িয়ে দেওয়ার ছক ছিল মুসার। ওই কাজে সফল হলে মুসা ও তার সঙ্গীদের আরও ‘বড় কাজ’ দিত আইএস-এর চাঁইরা।

এনআইএ-র এক কর্তার কথায়, ‘‘আমিন ও কালো সরাসরি আইএস সদস্য না হলেও খুন, ধর্ষণে মুসাকে সাহায্য করবে বলে ঠিক ছিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement