অমিতের আসা চেতলার বস্তিতেই নেই বিজেপি এজেন্ট

কলকাতা পুরসভার ওই উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী কলকাতার মেয়র ফিরহাদ (ববি) হাকিম। ফলে সকলের নজর ছিল সে দিকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫২
Share:

চেতলার উপনির্বাচনে ফিরহাদ হাকিম। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।

কলকাতার বস্তিতেও যে দলের সংগঠন বাড়ছে, তা দেখাতে বছর দুয়েক আগে সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে দক্ষিণ কলকাতার চেতলায় এক বস্তিতে নিয়ে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। সেটি কলকাতা পুরসভার ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের চেতলা লকগেট বস্তি বলে পরিচিত। রবিবার উপনির্বাচন হল ওই ওয়ার্ডে। লকগেট বস্তির বাসিন্দারা যে বুথে ভোট দেন, সেখানে কোনও এজেন্ট দিতে পারল না বিজেপি। এমনকী ভোটকেন্দ্রের কাছে কোনও শিবিরও খুলতে পারেনি দিলীপ ঘোষেদের দল।

Advertisement

কলকাতা পুরসভার ওই উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী কলকাতার মেয়র ফিরহাদ (ববি) হাকিম। ফলে সকলের নজর ছিল সে দিকে। তাতে বাড়তি মাত্রা জোগায় বিজেপির এজেন্ট না থাকার বিষয়টি। ওই দলের প্রার্থী জীবন সেনের অবশ্য দাবি, ‘‘তৃণমূল ভয় দেখিয়েছে, তাই এজেন্ট পাওয়া যায়নি।’’ সেই দাবি নস্যাৎ করে ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘‘ওদের সংগঠন নেই। পায়ের তলায় মাটি নেই। সেটা প্রকাশ করলে দলের দৈন্যতা বেরিয়ে পড়বে তো। তাই ভয় দেখানো, সন্ত্রাস এ সব বলে দলের বদনাম ঘোচানোর অপচেষ্টা করছে।’’ আর লকগেট বস্তিতে যাঁদের বাড়িতে গিয়েছিলেন অমিত শাহ, সেই অতনু মণ্ডলের মন্তব্য, ‘‘উন্নয়নের জন্যই পিছিয়ে পড়েছে বিজেপি। এজেন্ট মিলছে না।’’

ওই ভোট যুদ্ধের আর এক প্রতিদ্বন্দ্বী বামফ্রন্টের শরিক সিপিআই। লকগেট বস্তির বুথের সামনে তাদের অবশ্য শিবির ছিল। সেই শিবিরে বসেছিলেন মধ্যবয়সী এক মহিলা শিখা মাল। কেউ ভয় দেখাচ্ছে নাকি? জানতে চাইলে সোজাসাপটা জবাব, ‘‘ভয় দেখাবে কেন? হারজিত তো আছেই। তাই বলে জায়গা ছাড়িনি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: শীতলাকে মানত করে প্রধান! স্কুলে পুজো তৃণমূলের

৮২ ওয়ার্ডের ১২টি ভোটকেন্দ্রে ৪২টি বুথে এ দিন ভোট হয়েছে। ফিরহাদের সমর্থনে পি এম রায় রোডের একটা বুথ সামলানোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন মহিলারা। অভিজাত ওই এলাকায় সকাল থেকে তাঁরা চেয়ার নিয়ে বসে পড়েছিলেন ভোটারদের স্লিপ বিতরণের কাজে। দুর্গাপুর সেতুর পাশে ঘোষপাড়া লেনের কাছে পুরসভার এক বিদ্যালয়ে ভোট দিতে সকাল সাড়ে ন’টায় হাজির হন নব্বই ছুঁইছুঁই সন্ধ্যা দাস। হাঁফানিতে আক্রান্ত হয়েও নাতি, নাতনিদের হাত ধরে কোনওমতে বুথের দিকে হাঁটছিলেন তিনি। এই বয়সেও ভোট? তাঁর জবাব, ‘‘ববি বেটা দাঁড়িয়েছে যে।’’

আরও পড়ুন: অধিকারীদের কোম্পানি তুলে দেব, হুঁশিয়ারি দিলীপের

প্রায় সাড়ে ৩৩ হাজার ভোটারের ওয়ার্ডে চতুর্মুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ফিরহাদ এবং জীবনবাবু ছাড়াও লড়ছেন সিপিআইয়ের শিশিরকুমার দত্ত এবং কংগ্রেসের অনিমেষ ভট্টাচার্য। বেলা সাড়ে ১২টায় চেতলা উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ে সপরিবার ভোট দেন মেয়র। পরে বলেন, ‘‘উন্নয়ন আমাদের প্রধান হাতিয়ার। বাংলা জুড়ে সেই কাজ দেখে মানুষ আমাদের পাশে রয়েছেন।’’

রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোট শান্তিপূর্ণ এবং অবাধ হয়েছে। প্রদত্ত ভোটের হার ৬৪.৪৭ শতাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন