খড়্গপুর ডিভিশন

টিকিট কাটতে ক্যাশই ভরসা ট্রেন-যাত্রীদের

চেন্নাই যাবেন বলে ট্রেনের সংরক্ষিত টিকিট কাটতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন শান্তনু দাস। হাতে বেশ কয়েকটি দু’হাজার টাকার নোট। কিন্তু খড়্গপুর স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের কর্মী করুণা শ্রী ওই নোট দেখেই ঘাড় নাড়লেন। অর্থাৎ ভাঙানি হবে না।

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:২৫
Share:

নগদেই লেনদেন। খড়্গপুর স্টেশনে। —নিজস্ব চিত্র

চেন্নাই যাবেন বলে ট্রেনের সংরক্ষিত টিকিট কাটতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন শান্তনু দাস। হাতে বেশ কয়েকটি দু’হাজার টাকার নোট। কিন্তু খড়্গপুর স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের কর্মী করুণা শ্রী ওই নোট দেখেই ঘাড় নাড়লেন। অর্থাৎ ভাঙানি হবে না। সেই সঙ্গে টিকিট কাউন্টারের ওই কর্মী অপেক্ষাও করতে বললেন শান্তনুবাবুকে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরে অবশ্য দু’হাজারি নোট ভাঙাতে পারলেন শান্তনুবাবু। ততক্ষণে তিনি বিরক্ত। বলছিলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার বলছে প্লাস্টিক মানির কথা। কিন্তু সেই কেন্দ্রের অধীন রেলের টিকিট কাউন্টারেই তো সেই পরিষেবা মিলছে না।”

Advertisement

রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের কোনও স্টেশনেই ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডে টিকিট কাটার ব্যবস্থা ছিল না। নোট-কাণ্ডের পরে শুধু হাওড়া স্টেশনের নিউ কমপ্লেক্সের (সাউথ) টিকিট কাউন্টারে এই বন্দোবস্ত চালু হয়েছে। তা-ও মাত্র ক’দিন আগে। খড়্গপুর-সহ বাকি স্টেশনে এখনও নগদই ভরসা। তাই ট্রেন যাত্রীদের নিত্য ভোগান্তি চলছে। বাড়ছে ক্ষোভ। রেলকর্মী অরুণাভ ঘোষ বর্মনও বলেন, “কেন্দ্র কার্ডে টাকা লেনদেনের কথা বলছে। অথচ খড়্গপুরের মতো বড় স্টেশনের কাউন্টারে মানুষকে রোজ নাজেহাল হতে হচ্ছে।”

নোট বাতিলের ধাক্কা সামলাতে মেদিনীপুর-খড়্গপুরের মতো মফস্সলের চা দোকান, পান গুমটিতেও চালু হয়ে গিয়েছে পেটিএম, কার্ড সোয়াইপের যন্ত্র পিওএস (পয়েন্ট অব সার্ভিস)। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে টনক নড়েছে খড়্গপুর রেলের। ঠিক হয়েছে, স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার সহযোগিতায় চারটি পিওএস যন্ত্র বসানো হবে খড়্গপুর স্টেশনের উত্তর ও দক্ষিণ দিকের টিকিট কাউন্টারে। ফলে, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড সোয়াইপ করে টিকিট কাটতে পারবেন যাত্রীরা। ক্রমে খড়্গপুর ডিভিশনের ৪০টি স্টেশনে এই ব্যবস্থা চালু হবে। খড়্গপুর সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার কুলদীপ তিওয়ারি বলেন, “সংরক্ষিত ও অসংরক্ষিত কাউন্টারে ৪টি পিওএস যন্ত্র বসবে। আশা করছি এই ব্যবস্থা চালু হলে সমস্যা মিটে যাবে।” তবে কবে এই ব্যবস্থা চালু হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি এই রেল কর্তা।

Advertisement

নোট-বাতিল পর্ব পেরিয়ে এখন ট্রেনের টিকিট কাউন্টারে বন্ধ হয়ে গিয়েছে পুরনো নোট নেওয়া। এ দিকে, ব্যাঙ্ক ও এটিএম থেকে এখনও অধিকাংশ দু’হাজার টাকার নোট মিলছে। বাজারে খুচরোর আকাল। ফলে, সঙ্কট ট্রেনের টিকিট কাউন্টারগুলিতেও। এখন কবে পিওএস বসে ও কার্ডে লেনদেন চালু হয়, সে দিকেই তাকিয়ে খড়্গপুরের ট্রেন যাত্রীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন