রাজ্যের স্কুলগুলিকে রাজনীতির আঁচ থেকে দূরে রাখতে উদ্যোগী অসম সরকার। সরকার সব স্কুলের পরিচালন কমিটি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের অর্থ তথা শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। সরকার ঠিক করেছে, স্কুলের পরিচালন কমিটির সদস্যদের কমপক্ষে স্নাতক হতে হবে। পাশাপাশি, রাজনীতির সঙ্গে যোগ রয়েছে এমন কাউকে পরিচালন কমিটিতে রাখা হবে না।
রাজনীতি এড়ানো এবং পরিচালকদের মানোন্নয়েই এই ব্যবস্থা বলে জানিয়েছেন হিমন্ত। এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘স্কুল পরিচালন কমিটিতে ন্যূনতম স্নাতক রাখার সিদ্ধান্ত সরকার গত বছরই নিয়েছে। সেই অনুযায়ী বিভিন্ন স্কুলে নতুন পরিচালন কমিটি তৈরিও হয়েছে।’’ স্কুল পরিচালনায় রাজনৈতিক সংশ্রব এড়ানোর বিষয়ে পার্থবাবুও আগ্রহী। তিনি বলেন, ‘‘কিছু জায়গায় রাজনীতির লোকেরা, যাঁরা কমিটির মাথায় বসেছিলেন তাঁদের সরিয়ে দিয়েছি। তবে সর্বত্র সম্ভব হয়নি।’’
অসম সরকার ঠিক করেছে, ২০ বছরে পুর-পঞ্চায়েত, বিধানসভা-লোকসভার ভোটে লড়েছেন, এমন কাউকে স্কুল পরিচালনা থেকে দূরে রাখা হবে। রাজনৈতিক দলের কোনও প্রাথমিক সদস্যকেও কমিটিতে রাখা যাবে না। হিমন্ত মনে করেন, ‘‘স্কুলের শিক্ষক, প্রধানশিক্ষক নিয়োগ থেকে আর্থিক ব্যবস্থা পরিচালনার দায়ও কমিটির হাতে থাকে। সে কারণেই তাঁদের মানোন্নয়ন প্রয়োজন। তাঁর বক্তব্য, স্কুলগুলিতে যাতে রাজনৈতিক অনুপ্রবেশ না হয় সেদিকেও সরকার লক্ষ্য রাখবে।’’ তবে পশ্চিমবঙ্গে দ্রুত রাজনীতি-মুক্ত স্কুল কমিটি গড়তে প্রধান বাধা ‘বাম আমলে’ তৈরি রাজ্যের পঞ্চায়েত আইন। শিক্ষায় ‘অনিলায়ন’-এর অঙ্গ হিসেবে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে স্থানীয় স্কুল কমিটিগুলিতে পদাধিকার সদস্য হিসেবে রাখার ব্যবস্থা রয়েছে বলে পার্থবাবু জানান। যে সময় এই ব্যবস্থা করা হয় তখন রাজ্যের ৯৯ শতাংশ পঞ্চায়েত সমিতি ছিল বামেদের দখলে। সেই ‘ঐতিহ্য’ যথারীতি এই আমলেও চলছে। পরিবর্তনের কোনও সম্ভাবনা আছে? পার্থবাবু পাশ কাটান, ‘‘পঞ্চায়েত আইনে পরিবর্তন দরকার। আমি তো পঞ্চায়েতের মন্ত্রী নই।’’