ধর্মের ভিত্তিতে কোনও স্কুল করতে দেবেন না, সব বন্ধ করে দেবেন বলে বুধবার আরএসএস-কে হুঁশিয়ারি দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
সিপিএম বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায় বিধানসভায় এ দিন মন্ত্রীর কাছে জানতে চান, সরস্বতী শিশুমন্দির ও সারদা বিদ্যামন্দির নামে কিছু স্কুল অনুমোদন পেয়েছে কি না। পার্থবাবু জানান, সরস্বতী শিশুমন্দির নামে কোনও স্কুল অনুমোদন পায়নি। তবে সারদা বিদ্যামন্দির নামে পশ্চিম মেদিনীপুরে ১টি, মুর্শিদাবাদে ২টি এবং উত্তর দিনাজপুরে ২টি— মোট ৫টি বেসরকারি স্কুল শিক্ষা বিভাগের অনুমোদন পেয়েছে।
মানসবাবু অবশ্য দাবি করেন, তৃণমূল জমানায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অনুমোদন নিয়ে ৯টি স্কুল চলছে। চলতি বছরে আরও ৮টি স্কুল সরকারের অনুমোদন পেতে চলেছে। উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে ২৫টি স্কুল অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। মানসবাবুর আরও বক্তব্য, বিকাশ ভবনের নির্দেশিকাই বলছে, রায়গঞ্জ এবং হেমতাবাদে দু’টি স্কুলে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করানোর জন্য নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস বিধায়ক অপূর্ব সরকারও জানান, ওই স্কুলগুলি গোপন রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে চালানো হয়। এদের ছুটির তালিকাও সরকারি ছুটির তালিকার সঙ্গে মেলে না।
শিক্ষামন্ত্রী জবাবে জানান, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের স্কুল চালানোর বিষয়টি স্পর্শকাতর এবং উদ্বেগজনক। তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, উত্তরবঙ্গ এবং উত্তর ২৪ পরগনা মিলিয়ে এই ধরনের কিছু স্কুল চলছে। তবে সেগুলির বেশির ভাগই অনুমোদন পেয়েছে বাম জমানায়। তৃণমূল আমলে সম্ভবত ১৩টি স্কুল অনুমোদন পেয়েছে। এই স্কুলগুলি আগেই কেন্দ্রের অনুমোদন পেয়ে যায়। তার পর সেই নথি দেখিয়ে রাজ্যের কাছে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট চায়। পার্থবাবুর কথায়, ‘‘তবে সরকার অনুমোদিত পাঠ্যক্রমের বাইরে এই সব স্কুলে পড়াশোনা হলে ও সম্প্রদায়কে বিভাজিত করা হলে অনুমোদন বাতিল করব। ১০০টি স্কুলের কাছে জবাবদিহি চেয়েছি।’’ পার্থবাবু আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রী কয়েকটি স্কুলের তালিকা দিয়েছিলেন। তদন্ত করে সেগুলিকে বাতিল করা হয়েছে। পরে সভাকক্ষের বাইরে পার্থবাবু বলেন, ‘‘ধর্মের ভিত্তিতে কোনও স্কুল চালাতে দেব না। সব বন্ধ করে দেব।’’
আরএসএস-এর স্কুল পরিচালন সমিতি বিবেকানন্দ বিদ্যা বিকাশ পরিষদ অবশ্য জানিয়েছে, তারা উত্তরবঙ্গে ১১৫টি এবং দক্ষিণবঙ্গে ২১৫টি স্কুল চালায়। সেগুলির মধ্যে দু’টি অনুমোদন পেয়েছে তৃণমূল জমানায়।