প্রেসিডেন্সির আসন ভরতেই হবে: পার্থ

ফরমান তো দিচ্ছেন! প্রেসিডেন্সির সব আসন পূরণের জন্য শিক্ষামন্ত্রী কোনও দাওয়াই ভেবেছেন কি?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:৪৩
Share:

পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

কোন বিষয়ে কত আসন কেন খালি পড়ে আছে, আগেই সেই তথ্য তলব করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী এ বার পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও ভাবেই আসন ফাঁকা রাখা যাবে না। প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, সব বিষয়ে সব আসন পূরণ করতেই হবে।

Advertisement

কিছু আসন খালি ছিল গত বছরেও। এ বার প্রেসিডেন্সির স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে প্রথম বর্ষে ভর্তির সময়সীমার পরে দেখা যাচ্ছে, তিনশোরও বেশি আসন ফাঁকা থেকে গিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বুধবার বলেন, ‘‘গত বছর ৩০ আসন ফাঁকা ছিল। এ বার শুনছি ৩০০! ঐতিহ্যবাহী ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসন ফাঁকা ফেলে রাখা যাবে না।’’

ফরমান তো দিচ্ছেন! প্রেসিডেন্সির সব আসন পূরণের জন্য শিক্ষামন্ত্রী কোনও দাওয়াই ভেবেছেন কি?

Advertisement

পার্থবাবু এই বিষয়ে কিছু না-জানালেও উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রে জানানো হয়, মুশকিল আসান হতে পারে দু’ভাবে। প্রথমত, প্রেসিডেন্সির মেধা-তালিকা সংশ্লিষ্ট ওয়েটিং লিস্টে নামের সংখ্যা বাড়িয়ে স্নাতক স্তরে ফাঁকা আসন ভরানো যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক হয়েও অনেকে ওই প্রতিষ্ঠানে স্নাতকোত্তর পাঠ নিতে চাইছেন না। অথচ স্নাতকোত্তরে নিজেদের পড়ুয়াদের জন্য ৬০ শতাংশ আসন রেখেছে প্রেসিডেন্সি। এই ৬০ শতাংশের লক্ষ্মণরেখাটা তুলে দিলে অর্থাৎ ওই সব আসনও বাইরের পড়ুয়াদের জন্য অবাধ করে দিলে অনেকটা সুরাহা হতে পারে।

এত আসন ফাঁকা কেন?

প্রেসিডেন্সি সূত্রের খবর, এই প্রশ্নের উত্তর উচ্চশিক্ষা দফতরে পাঠানো হয়েছে। তবে এ বছর নতুন করে ভর্তি-প্রক্রিয়া চালু করে আসন পূরণ করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে। কারণ, ক্লাস অনেকটা হয়ে গিয়েছে। প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষাও শুরু হবে ২০ নভেম্বর।

স্নাতক স্তরে তৃতীয় পর্ব পর্যন্ত কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করে আসন ভরানোর চেষ্টা করা হলেও তা সফল হয়নি। স্নাতকোত্তরে সেই চেষ্টা আদৌ হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রেসিডেন্সির ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম ডলই। স্নাতক স্তরে রসায়নে ৫০টি আসনের মধ্যে ৩৪টিই ফাঁকা পড়ে রয়েছে। পদার্থবিদ্যায় ৪৮টি আসনের মধ্যে খালি ৩০টি। বিজ্ঞান শাখার এই দু’টি প্রধান বিষয়ে অর্ধেকের বেশি আসনে কেন ছাত্র বা ছাত্রী পাওয়া গেল না, সেই প্রশ্ন শিক্ষা শিবিরের একাংশেরও।

গত বার আসন খালি থেকে যাওয়ায় এ বছর তুলনামূলক ভাবে আগেভাগে ভর্তির পরীক্ষা নিতে উদ্যোগী হয়েছিল প্রেসিডেন্সি। গত কয়েক বছরের মতো ভর্তির পরীক্ষা নিয়েছিল জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডই। পড়ুয়াদের অভিযোগ, ছাত্র ভর্তির ‘ওয়েটিং লিস্ট’ বা প্রতীক্ষার তালিকায় এ বার কম নাম রাখা হয়েছে। তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের মধ্যে যাঁরা ভর্তি হয়েছিলেন, তাঁদেরও অনেকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। কিন্তু সেই সব আসন পূরণ করতে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ভাবে সক্রিয় হননি বলেই ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ।

স্নাতকোত্তর স্তরের ছবিটা এত মলিন কেন? কেনই বা প্রেসিডেন্সির স্নাতক স্তরের পড়ুয়াদেরও অনেকে স্নাতকোত্তর পাঠ নিতে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হননি?

এই বিষয়ে এ দিন প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানা যায়নি।

প্রেসিডেন্সির বহিরঙ্গ সাজিয়ে তোলার চেষ্টা চলছে। অথচ ছাত্র ভর্তির ছবিটা মলিন। এই নিয়ে চিন্তিত প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তনীরাও। এই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্সির ভবিষ্যৎ নিয়ে শনিবার একটি আলোচনাসভার আয়োজন করছে প্রাক্তনী সংসদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন