শীত দূরেই, হেমন্তে কি ফের ঘূর্ণিঝড়

হিমের আশা যে দূর অস্ত্ তা আগেই বলেছিলেন আবহবিদেরা। এ বার ভরা কার্তিকে ফের বৃষ্টির ভ্রূকূটি দেখাচ্ছে আন্দামান সাগরের একটি ঘূর্ণাবর্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৬ ০৪:০২
Share:

হিমের আশা যে দূর অস্ত্ তা আগেই বলেছিলেন আবহবিদেরা। এ বার ভরা কার্তিকে ফের বৃষ্টির ভ্রূকূটি দেখাচ্ছে আন্দামান সাগরের একটি ঘূর্ণাবর্ত। সদ্য কুমিরের লেজের ঝাপটা খাওয়া বাংলা ও ওড়িশার কপালে নতুন কোনও ঘূর্ণিঝড় রয়েছে কি না, তা নিয়েও চলছে জল্পনা। হাওয়া অফিসের খবর, বঙ্গোপসাগরের কাছে থাকা একটি ঘূর্ণাবর্তের জন্য রবিবার থেকে আকাশে কিছু মেঘ ঢুকছে। সেটা ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। কিন্তু ইতিমধ্যে আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত দানা বেঁধেছে। সেটির উপরেই এখন মূল নজর মৌসম ভবনের। ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে সেটি। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাশ সোমবার বলেন, বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণাবর্তটি মঙ্গলবার দুর্বল হয়ে যাবে। আন্দামান সাগরের ঘূর্ণাবর্তটি ওই দিনই শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। সেটির ভবিষ্যৎ কি হতে পারে তা মঙ্গলবারের পরেই বোঝা যাবে।

Advertisement

আবহবিদদের একাংশ জানান, বর্ষা বিদায় নেওয়ার পর এবং শীত জাঁকিয়ে বসার মাঝের সময়টায় আবহাওয়া অস্থির থাকে। সেই সময় ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার অনুকূল পরিস্থিতি থাকে।

২০১৩ সালে অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের গোড়ার মধ্যে চারটি বড় মাপের ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছিল। এমনটা সাধারণত দেখা যায় না। আবহবিদদের অনেকে বলছেন, সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা ২৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলেই তা ঘূর্ণিঝ়ড় তৈরির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করে। এখন বঙ্গোপসাগরের তাপমাত্রা বেশি রয়েছে বলেও তাঁরা জানান। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির পেছনে বিশ্ব উষ্ণায়নকে দুষছেন অনেকে।

Advertisement

রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীনস্থ সংস্থা ইন্টার গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ-এর (আইপিসিসি) শেষ রিপোর্টেও একই কথা বলা হয়েছে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের অনেকেই বলছেন, ওই রিপোর্টে বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সাগরের তাপমাত্রাও বাড়বে। তার ফলে ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপও বাড়বে। চলতি মরসুমে ঘূর্ণিঝড় সত্যি হানা দেবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে আবহবিদদের মধ্যে। তবে সাগরে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ায় এ রাজ্যে হেমন্ত যে দূর হচ্ছে তা নিয়ে সংশয় নেই অনেকেরই। তাঁরা বলছেন, এ সব উৎপাতের জন্য উত্তরে হাওয়া ঢুকতে পারছে না। বাতাসে হিম ভাবটাও মিলছে না। এই ঘূর্ণাবর্ত শেষ হলেও তার রেশ কাটতে কাটতে নভেম্বরের মাঝামাঝি গড়িয়ে যাবে। এমনকী আরও দেরি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেকে।

আবহবিদেরা বলছেন, নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই তাপমাত্রা নামতে থাকে। পারদের উত্থান পতনের মধ্যে দিয়ে ডিসেম্বরে শীত দক্ষিণবঙ্গে থিতু হয়। আগে কালীপুজো থেকেই হিমের আমেজটা শুরু হত। তাপমাত্রার পতনটাও অনেক ছন্দ মেনে হতো। ফলে হেমন্ত বলে একটা ঋতুর অস্তিত্ব ছিল। ইদানীং হেমন্ত উধাও হয়ে গিয়েছে। ফলে তাপমাত্রার উত্থান পতনের ছন্দটাও বিগড়ে গিয়েছে। চিকিৎসকদের অনেকেও বলছেন, আচমকা ঠান্ডা গরমের জেরে পরজীবি ঘটিত রোগের প্রকোপও বাড়ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন