রান্নার গ্যাসের জোগান নেই নির্জলা পাহাড়ে

কালিম্পং, কার্শিয়াঙে অবশ্য জলের সমস্যা ততটা তীব্র নয়। তবে বড় ধস নামলে বিপদ বাড়তে পারে, আশঙ্কায় রয়েছেন এলাকাবাসী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৭ ০৩:৪১
Share:

ধসে পাইপ ফেটে গিয়েছে। বন্‌ধের জেরে রান্নার গ্যাস সরবরাহ কাউন্টারগুলিতেও তালা। পাহাড়ে এখন মাথায় হাত। তাদের অনেকেরই প্রশ্ন: এখন কি কাঁচা মাংস, আনাজপাতি খাব? জলই বা পাব কী করে?

Advertisement

কালিম্পং, কার্শিয়াঙে অবশ্য জলের সমস্যা ততটা তীব্র নয়। তবে বড় ধস নামলে বিপদ বাড়তে পারে, আশঙ্কায় রয়েছেন এলাকাবাসী। দার্জিলিং পুরসভার কিন্তু জলের চিন্তায় মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড়। দার্জিলিঙে জল সরবরাহ হয় সিঞ্চল এলাকার কয়েকটি জলাধার থেকে। সেই জল জোরবাংলো এলাকায় পরিশোধন করে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। কিন্তু গত ৪ জুলাই ধসে টেন রোডের কাছে আলুবাড়ি এলাকায় প্রায় কুড়ি মিটার জায়গা জুড়ে পাইপ ফেটে গিয়েছে। তার পর থেকেই জল সরবরাহ পুরো বন্ধ। জেলা প্রশাসন দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু বন্‌ধের জন্য অনেক কর্মী কাজে যোগ দিচ্ছেন না। ফলে মেরামতির কাজ হচ্ছে ধীরে। দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান ডি কে প্রধান বলেন, ‘‘নাগাড়ে বৃষ্টি চলছে। তার জেরেও মেরামতিতে সমস্যা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, দশ দিনের আগে পাইপ পুরোপুরি মেরামত করা সম্ভব নয়।

জলের সঙ্গে বিপদসঙ্কেত রান্নার গ্যাসেও। ফুরিয়ে গিয়েছে মজুত। ফলে শুক্রবার থেকে তালা ঝুলছে পাহাড়ে রান্নার গ্যাস সরবরাহের সব কাউন্টারে। বন্‌ধের জেরে গ্যাসের ট্রাক পাহাড়ে উঠতে পারছে না। জেরবার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্রমশই ক্ষোভ ছড়াচ্ছে। লাগাতার বন্‌ধ করে কী ফল মিলল, তা নিয়েও প্রকাশ্যে মুখ খুলতে শুরু করেছেন অনেকে। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, আলু, স্কোয়াশ যা মিলছিল, তা এত দিন ফুটিয়ে খাওয়া যাচ্ছিল। গ্যাস সিলিন্ডার না পেলে কি কাঁচা খেতে হবে— এমনই প্রশ্ন বাসিন্দাদের একাংশের।

Advertisement

ক্ষোভের আঁচ পেয়ে পেয়ে শুক্রবার আসরে নামেন মোর্চার সহ-সম্পাদক বিনয় তামাঙ্গ। সঙ্কটের জন্য তিনি রাজ্যকেই দায়ী করেন। বিনয় বলেন, ‘‘সমতল থেকে রান্নার গ্যাস উঠতে দেওয়া হচ্ছে না।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা সাংবিধানিক দাবি নিয়ে গণতন্ত্রের পথেই আন্দোলন চালাচ্ছি। কিন্তু সমতল থেকে রান্নার গ্যাস উঠতে না দেওয়া অমানবিক।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দার্জিলিঙে কোনও প্রশাসন রয়েছে বলে মনে হচ্ছে না।’’

মোর্চার আরও দাবি, পুলিশ সব জানে। তবু কোনও পদক্ষেপ করছে না। রাজ্য সরকারের পাল্টা দাবি, আন্দোলনকারীদেরই একাংশ পাহাড়ে আনাজ পৌঁছতে বাধা দিচ্ছে। একই সঙ্গে পাহাড়ে রেশন দোকানও খুলতে দেওয়া হচ্ছে না। বিনয় তামাঙ্গ এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘রেশন সামগ্রী নিয়ে আসা ট্রাক কে বা কারা আটকেছে, তার উপরে কে হামলা করেছে, তা আমাদের জানা নেই।’’

নয়াদিল্লির খবর, রাজ্য ও মোর্চা রাজি থাকলে দার্জিলিঙে শান্তি ফেরাতে ফের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকতে ইচ্ছুক কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, সব পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমেই একমাত্র পাহাড়ে শান্তি ফেরানো সম্ভব। রাজ্য অবশ্য ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের কথা বারবারই খারিজ করে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন