ট্রেনে হাত, পা দুই-ই কাটা পড়েছিল তাঁর। প্ল্যাটফর্মের গা ঘেঁষে রেললাইনের ধারে পড়ে কাতরাচ্ছিলেন। সেই দৃশ্য দেখতে এবং মোবাইলে তাঁর ছবি ও ভিডিয়ো তুলতে ভিড় জমে যায় জলপাইগুড়ির রানিনগর স্টেশনে। কিন্তু কেউ ওই জখম ব্যক্তিকে বাঁচাতে আসেননি। ঘণ্টাদেড়েক পড়ে থাকার পরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হাসপাতালে নিয়ে যায় অসমের বাসিন্দা হাসিমুদ্দিনকে। সেখানে মারা যান তিনি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার এই ঘটনার পরে অভিযোগের আঙুল উঠেছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দিকে। চিকিৎসক জানান, দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে হাসিমুদ্দিনের। তার জেরেই মৃত্যু।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরে যখন রানিনগর স্টেশন ছেড়ে বঙ্গাইগাঁও-এনজেপি প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি বার হয়ে যায়, তখনই লাইনের ধারে পড়ে থাকতে দেখা যায় হাসিমুদ্দিনকে। কেউ ধাক্কা দিয়ে ফেলেছে, নাকি তিনি নিজেই পড়ে গিয়েছেন— জবাব মেলেনি। রক্তাক্ত হাসিমুদ্দিনকে দেখতে ভিড় জমে যায় প্ল্যাটফর্মে। পরে প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ জানান, তাঁরা উদ্ধার করতে যান হাসিমুদ্দিনকে। কিন্তু সেখানকার রেলকর্মীরা সাবধান করে দিয়ে বলেন, এর পরে রেলপুলিশের জেরার মুখে পড়তে হবে!
রানিনগর স্টেশনের আরপিএফ আধিকারিক বিশ্বজিৎ তিওয়ারি জানান, জখম ব্যক্তিকে উদ্ধার করলে জেরায় পড়তে হবে— এ কথা বিশ্বাস করা ঠিক নয়। কেন রেল অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করেনি, সেই প্রশ্নের জবাবে রেলের দাবি, অ্যাম্বুল্যান্স যে তাঁরা ডেকেছেন, সেটা জানানো হয়। স্টেশন সুপারিটেন্ডেট (এসএস) এস কে সুমন বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার পরই রেল হাসপাতাল ও জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য জানানো হয়। যানজটের জেরে দেরিতে অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছয়। তার আগেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি জখম ব্যক্তিকে নিয়ে যান।’’