অস্ত্রকাণ্ডে ধৃত আরও এক, বাজেয়াপ্ত গাড়ি

অসম থেকে গাড়িতে চাপিয়ে অস্ত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল দার্জিলিঙে। অসমের ধালিগাঁওতে পুলিশ ওই অস্ত্র উদ্ধার করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৫
Share:

অসম থেকে গাড়িতে চাপিয়ে অস্ত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল দার্জিলিঙে। অসমের ধালিগাঁওতে পুলিশ ওই অস্ত্র উদ্ধার করে। তিন বছর আগের ওই মামলায় গত বুধবার আরও এক জনকে ধরেছে পুলিশ। কালিম্পঙের চন্দ্রলোকের বাড়ি থেকে অম্বর ধোজ মঙ্গর ওরফে ভুট্টা নামে এই ব্যক্তিকে ধরেছে পুলিশ। ধৃত ভুট্টা মোর্চা সমর্থক বলে জানা গিয়েছে। এ দিন তাকে দার্জিলিং জেলা আদালতে তোলা হয়। দার্জিলিঙের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জয়দীপ ভট্টাচার্য ধৃতকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। অস্ত্র উদ্ধার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা তথা জিটিএ-এর সদস্য সঞ্জয় থুলুঙ্গ এখনও ফেরার। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত অম্বর থুলুঙ্গের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। অস্ত্র উদ্ধারের পরে একটি গাড়িও বাজেয়াপ্ত করেছিল পুলিশ। অম্বরই ওই গাড়ির মালিক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

দার্জিলিং জেলা আদালতের সহকারী আইনজীবী পঙ্কজ প্রসাদ বলেন, ‘‘অস্ত্র উদ্ধার মামলায় আগে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাদের জেরা করেই মঙ্গরের নাম পেয়েছিল পুলিশ। বেশ কিছু দিন ধরে তার খোঁজও চলছিল।’’

২০১৪ সালের ৮ নভেম্বর অসমের ধালিগাঁওতে অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয় উমেশ কামি এবং গণেশ ছেত্রী নামে দু’জন। গাড়ি থেকে একাধিক অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ধার হয়। সে বছরের জানুয়ারি মাসে শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থেকেও অস্ত্র উদ্ধার করেছিল পুলিশ। সেই মামলায় জেরা করতে উমেশ এবং গণেশকে হেফাজতে নেয় সিআইডি। জেরায় ধৃতরা জানায় এর আগেও একাধিকবার অসম থেকে দার্জিলিঙে অস্ত্র পৌঁছে দিয়েছে তারা। যে গাড়িতে অস্ত্র পাচার হয়েছিল তার বিবরণও দেয় ধৃতরা। সে বছরই দার্জিলিঙের সিংমারি থেকে একটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। এসইউভি গাড়িতে একটি গোপন কুঠুরিও মেলে। অস্ত্র পাচারের উদ্দেশ্যেই ওই কুঠুরি তৈরি করা হয়েছিল বলে পুলিশ মনে করছে। ধৃত মঙ্গর ওই গাড়ির মালিক বলে পুলিশের দাবি। অস্ত্র পাচারে অভিযুক্ত থুলুঙ্গকে মোর্চা দল থেকে সাসপেন্ড করেছিল। এ দিন মোর্চা দাবি করেছে, তাদের কেউ অস্ত্রের কারবারের সঙ্গে যুক্ত নয়।

Advertisement

পুলিশ তদন্তে জানতে পারে মোর্চা নেতা থুলুঙ্গের নির্দেশেই অস্ত্রগুলি দার্জিলিঙে নিয়ে য়াওয়া হচ্ছিল। অস্ত্র উদ্ধারের পরেই থুলুঙ্গ ফেরার হয়ে যায়। তার ভাইকেও পুলিশ ধরেছিল। বর্তমানে সে জামিনে মুক্ত রয়েছে। কী উদ্দেশ্যে মোর্চা নেতা অস্ত্র উদ্ধার করছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। ২০১৪ সালে ধৃতদের জেরা করে সে বছরের ডিসেম্বরে পুলিশ রংলি রংলিওট এলাকায় একটি পরিত্ত্যক্ত বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখান থেকে একটি রাইফেল এবং ২২ রাউন্ড গুলি সহ বেশ কিছু লিফলেট উদ্ধার হয়। লিফলেটে পৃথক রাজ্যের দাবি অস্ত্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান ছাপানো হয়েছিল। পুলিশ জানায়, নাগাল্যান্ডের একটি জঙ্গি সংগঠনের থেকে অস্ত্র কেনা হয়েছিল বলেও ধৃতরা জেরায় দাবি করে। ধৃত মঙ্গরকে জেরা করে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে আরও কাদের যোগাযোগ রয়েছে তা জানার চেষ্টা করবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন