১১ বছরের বালকের মৃত্যু চিতাবাঘের হানায়

আবারও চিতাবাঘের আক্রমণে প্রাণ গেল এক বালকের। রবিবারে ঘটনাটি ঘটেছে রামঝোড়া চা বাগানে। মৃত বালকের নাম অনিকেত ওঁরাও (১১)। গত ১২ তারিখ ধুমচিপাড়া চা বাগানেও ছ’বছরের এক বালকের মৃত্যু হয়েছিল চিতাবাঘের আক্রমণে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বীরপাড়া শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৯
Share:

প্রতীকী ছবি

আবারও চিতাবাঘের আক্রমণে প্রাণ গেল এক বালকের। রবিবারে ঘটনাটি ঘটেছে রামঝোড়া চা বাগানে। মৃত বালকের নাম অনিকেত ওঁরাও (১১)। গত ১২ তারিখ ধুমচিপাড়া চা বাগানেও ছ’বছরের এক বালকের মৃত্যু হয়েছিল চিতাবাঘের আক্রমণে। এ দিন ঘটনার পর মাদারিহাট থেকে বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে, তাঁদেরকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় মানুষ। বন দফতর থেকে চিতাবাঘটিকে ধরার এবং ওই বাগান এলাকায় পটকা ও টিন পেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

মৃত অনিকেত ওঁরাও-এর বাবা রামু ওঁরাও জানালেন, রবিবার সকালে তাঁর স্ত্রী সুষমা ওঁরাও বাগানে ঘাস আনতে যান। ছেলে অনিকেতও যায় মায়ের পিছন পিছন। বাড়ি থেকে কিছু দূরে যাওয়ার পর, একটি চিতাবাঘ পিছন থেকে গলা কামড়ে অনিকেতকে চা বাগানের জলের ট্যাঙ্ক সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে যায়। রবিবার হাটের দিন ছিল। রাস্তায় একটি বাচ্চা ছেলেকে চিতাবাঘ মুখে করে নিয়ে যাচ্ছে দেখে চিৎকার করে ওঠেন শিবানি ওঁরাও, রিনি ওঁরাওরা। তাঁদের চিৎকার শুনে কয়েকজন চিতাবাঘটির পিছনে ধাওয়া করে। ভয় পেয়ে চা বাগানের মধ্যে শিশুটিকে মুখ থেকে ফেলে পালিয়ে যায় চিতাবাঘটি।

চিতাবাঘের আক্রমণে ধুমচিপাড়া চা বাগানে ইডেন নায়েকের মৃত্যু হয় বারো দিন আগে। তারপর এ দিন রামঝোড়া চা বাগানের ঘটনা পর স্থানীয় মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। চিতাবাঘটিকে ‘মানুষ খেকো’ ঘোষণা করে মেরে ফেলার দাবি জানালেন বাগানের শ্রমিকরা। উত্তেজিত শ্রমিকরা বন দফতরের ডিএফওকে ঘটনাস্থলে আসার দাবি জানান। বনকর্মীদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। রামঝোড়া চা বাগানে স্থায়ী বনকর্মীদের পাহাড়ায় রাখার দাবি তোলেন বাগানের স্থানীয় মানুষজন।

Advertisement

স্থানীয় তৃণমূল নেতা নবীন শর্মা বলেন, ‘‘বাগানের শ্রমিকদের বুঝিয়ে মৃতদেহ বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চিতাবাঘটি ধুমচিপাড়া চা বাগানে একটি শিশুকে মারার পর সুন্দর সিংহ লাইনে বুধরাম মাঝি নামে এক বৃদ্ধকে আহত করে। মানুষের রক্তের স্বাদ ও পেয়েছে। বন দফতরের অবিলম্বে চিতাবাঘটি কে ধরার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’ স্থানীয় শিক্ষক জাভেদ আলিও বলেন, ‘‘খুব তাড়াতাড়ি বনকর্মীদের চিতাবাঘটিকে ধরার জন্য তৎপর হতে হবে।’’

বন দফতরের ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরি বলেন, ‘‘চিতাবাঘের আক্রমণে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা মর্মান্তিক।’’ তিনি বনমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন বলে জানালেন। ধুমচিপাড়া চা বাগানের মতো, রামঝোড়া চা বাগানেও প্রতিদিন সকালে টিন পেটানো এবং পটকা ফাটানোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানান, রামঝোড়া চা বাগানে চিতাবাঘটিকে ধরার জন্য বন দফতরের ‘ট্রাঙ্কুলাইজ’ দল পাঠান হয়েছে। জলদাপাড়ার সহকারি বন্যপ্রাণ সংরক্ষক বিমল দেবনাথ বলেন, ‘‘সরকারি নিয়মে ওই বালকের পবিবারকে ক্ষতিপুরণ দেওয়া হবে। চা বাগানের বাসিন্দা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য সকালে টিন পেটাবার ব্যবস্থা করা হবে। আর চিতাবাঘ টিকে ধরার জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন