সময়সীমা পার হল মঙ্গলবার। অথচ দিনভর অপেক্ষায় থাকলেও চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্যদের হাতে মাথাভাঙার কটেজ হোমের শিশু আবাসিকদের তুলে দেওয়া হল না। এ দিনের মধ্যেই শাসক দলের বিধায়ক হিতেন বর্মনের স্ত্রী কল্পনাদেবীর ওই হোমের
আবাসিক ১৩ জন শিশুকে সিডব্লিউসির হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন।
সোমবারই কল্পনাদেবী জানিয়েছিলেন, সিডব্লিউসি নয়, তাঁরা অভিভাবকদের হাতেই শিশুদের তুলে দেবেন। সেই মতো তিনি ওই দিন অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠকও করেন। হোম কর্তৃপক্ষের দাবি, বৈঠকে অভিভাবকরা শিশুদের ওই হোমে রাখতেই ইচ্ছুক বলে জানান। অভিভাবকদের এই বক্তব্য তাঁরা প্রশাসনকে জানিয়ে দেন বলেও দাবি।
কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন অবশ্য এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তিনি বলেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্য নিতাই সরকার জানান, দিনভরই অফিসে ছিলেন তাঁরা। তিনি বলেন, “মাথাভাঙার ওই হোম থেকে শিশুদের আমাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও কেউ হাজির হননি।” কেন প্রশাসনের নির্দেশকে অমান্য করা হচ্ছে তা নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে চাননি হোম কর্তৃপক্ষ। কল্পনাদেবী সোমবারই দাবি করেছেন, ওই হোম চালানোর ব্যাপারে সরকারি কোনও সাহায্য মেলেনি। নিজের টাকা খরচ করে তিনি হোম চালান। এমনকি কটেজ হোমের নবীকরণ করতেও তাঁকে তিন বছর ধরে ঘুরতে হচ্ছে। ওই হোমে যে শিশুরা রয়েছে তাঁদের প্রত্যেকের অভিভাবক রয়েছে। অভিভাবকদের কথাই তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন। এ ব্যাপারে হিতেনবাবু কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, “আমি বিধানসভায় আছি। ওই বিষয়ে এখন কিছু বলা সম্ভব নয়।”
অভিযোগ, বিধায়কের স্ত্রীর ওই হোমে নানা দুর্নীতি হয়েছে। প্রশাসন ও চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে ওই হোম চালানো হচ্ছিল। উঠেছে হোমের তথ্য গোপনের অভিযোগও। তা নিয়ে কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন সমাজকল্যাণ দফতরে চিঠি দিয়ে হোমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান। এর পরেই হোম কর্তৃপক্ষকে শো-কজ করে সেখানে শিশুদের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ হয়।