ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল এই ছবি। — ফাইল চিত্র
কৃষ্ণ ও কলির খোঁজ শুরু করেছেন পর্যটকরা। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ব্ল্যাকপ্যান্থারের ছবি গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়ার খবর প্রকাশ হওয়ার পরেই ফোন সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। গত বছর এই সময় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে গোপন ক্যামেরায় ছবি ওঠে দুটি পূর্ণ বয়স্ক ব্ল্যাকপ্যান্থারের। একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী ব্ল্যাকপ্যান্থার। রাজ্যে এই প্রথম কোনও ব্ল্যাকপ্যান্থারের ছবি ক্যামেরা বন্দি হওয়ায় খুশির হাওয়া পর্যটক মহলেও।
বন দফতর সূত্রে জানাগিয়েছে, কর্নাটকের ডানডেলি, কাবেনি ও ভদ্রা অভয়ারণ্য, অসমের মানস সহ দেশের অন্য জঙ্গলে আগে ব্ল্যাকপ্যান্থার ক্যামেরা বন্দি হয়েছে। রাজ্যে মহানন্দা জঙ্গল ও বক্সায় ব্ল্যাক প্যান্থারের দেখা মিললেও ছবি ধরা পড়েনি। ব্ল্যাকপ্যান্থারে আসলে চিতাবাঘ, যার শরীরের মেলানিন বেশি থাকায় কালো রঙের প্রভাব বেশি থাকে। বনকর্মীরা জানান, শুধু ব্ল্যাকপ্যান্থার নয়। বক্সায় ভাল্লুক, ওয়াইল্ড ডগ, দৈত কাঠবেড়ালি যা জায়েন্ট স্কুইরাল নামে পরিচত, তা রয়েছে।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের এফডি উজ্জ্বল ঘোষ জানান, নিরাপত্তার খাতিরে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কোনও এলাকায় এই ব্ল্যাক প্যান্থারের ছবি গত বছর উঠেছিল, তা প্রকাশ করা হয়নি। এ বছরেও ওই যুগলের ছবি তোলার জন্য একশো চল্লিশটা ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
জয়ন্তী টুরিস্ট গাইড অ্যাসোসিয়েশনের তরফে শেখর ভট্টাচার্য জানান, এই ব্ল্যাকপ্যান্থার বিরল। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে ব্ল্যাকপ্যান্থারের প্রমাণ মেলা নিঃসন্দেহে পর্যটকদের কাছে আনন্দের। ইতিমধ্যে পর্যটকরা আমাদের কাছে ব্ল্যাকপ্যান্থারের বিষয় খোঁজ খবর শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘তবে পর্যটকরা জঙ্গলের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত না করেন, সে দিকে খেয়াল রাখার দায়িত্ব আমাদের। জয়ন্তীর লজ মালিক তথা ইস্টার্ন ডুয়ার্স রিসর্ট ওনার্সের সহ সভাপতি পার্থসারথি রায় জানান, ‘‘ইতিমধ্যে আমরা বহু পর্যটকের ফোন পেয়েছি। পর্যটকরা বক্সায় আসার কথা জানাচ্ছেন।’’
ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটরের তরফে সম্রাট সন্যাল জানান, ব্ল্যাকপ্যান্থারের জন্য রাজ্য পর্যটন দফতরকে প্রচার করার প্রয়োজন রয়েছে। এতে পর্যটকরা আরও ডুয়ার্সমুখী হবেন। বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হতে পর্যটন মন্ত্রীকে বলবেন। ট্যুর অপারেটর তাপসী বসু জানান, ‘‘বক্সার জঙ্গলে ইতিমধ্যে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আনার তোড়জোর শুরু করেছে রাজ্য বনদফতর। তার মধ্যে ব্ল্যাকপ্যান্থারের খবর পর্যটকদের কাছে আনন্দের। আমাদের কাছে ইতিমধ্যে পর্যটকরা ফোন করতে শুরু করেছেন।’’
আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত জানান, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে ব্ল্যাকপ্যান্থার ছিল। তবে বনদফতরের ক্যামেরায় তার ছবি মেলা খুশির বিষয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে। পর্যটকদের অতিরিক্ত চাপে যাতে বক্সার জীববৈচিত্র বিঘ্নিত না হয়।