উদ্ধার হওয়া সোনার বাট। — নিজস্ব চিত্র
ধনতেরাসের আগে চিন থেকে চোরাপথে সোনা ঢুকছিল শহরে। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে কালোবাজারে সোনা বিক্রিও চলছিল। গত শুক্রবার শিলিগুড়িতে কেন্দ্রীয় রাজস্ব দফতরের (ডিআরআই) তল্লাশিতে উদ্ধার হল প্রায় ১৫ কেজি সোনা। সোনা পাচারের অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতারও করেছে ডিআরআই। সহরের শেঠ শ্রীলাল মার্কেটের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছে চোরাপথে সোনা ঢুকছে শুনে তল্লাশি শুরু হয়। শুক্রবার দুপুরে সেবক রোডে ব্যবসায়ীকে আটকে দেয় ডিআরআই-এর গোয়েন্দারা। ব্যবসায়ী একটি স্কুটি চালাচ্ছিলেন। ডিআরআই-এর দাবি, স্কুটির ডিকি খুলে দেখা যায় ভিতরে পরপর সাজানো ৫টি সোনার বাট। ব্যবসায়ীকে জেরা করে সেবক রোডের আরেকটি ফ্ল্যাট থেকে আরও ১০টি সোনার বার এবং ২০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে। বাইশ ক্যারেট সোনার বাটগুলির প্রতিটির ওজন ১ কেজি। মোট ১৫ কেজি সোনা এবং নগদ টাকা মিলিয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
শনিবার ধৃতদের শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসিজিএমের এজলাশে ধৃতদের তোলা হলে, চোদ্দ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ডিআরআই জানিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে সেবক রোড থেকে কমলকুমার বার্মা নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়, পরে সেবক রোডেরই একটি ফ্ল্যাট থেকে কুঙ্গ তেনজিং ভূটিয়া নামে এক কার্শিয়াঙের বাসিন্দাকে ধরা হয়েছে। কুঙ্গের থেকেই ব্যবসায়ী কমলকুমার বার্মা সোনার বাট পেয়েছিল বলে দাবি। শুধু ওই ব্যবসায়ীকেই নয়, আরও কয়েকজনের কাছে কুঙ্গ সোনা পাচার করেছে বলে ডিআরআই জানতে পেরেছে। ধৃত কুঙ্গের নাগরিকত্ব নিয়েও সন্দিহান গোয়েন্দারা। তার থেকে উদ্ধার হওয়া পাসপোর্টে কার্শিয়াঙের ডাউহিলের ঠিকানা থকালেও, সে নেপালি, হিন্দি কোনও ভাষাই জানে না বলে দাবি করেছে। ডিআরআই-এর আইনজীবী রতন বণিক বলেন, ‘‘ধৃতদের জেরা করে আরও বেশ কয়েকজনের নাম-ঠিকানা মিলেছে। একটা বড় চক্রের হদিশ মিলেছে।’’
সূত্রের দাবি, সোনার বারগুলি চোরাপথে শিলিগুড়ি ঢোকে। সেগুলিকে ধনতেরাসের আগে চড়া দামে কালোবাজারে বিক্রির চেষ্টা চলছিল বলে ডিআরআই-এর তরফে দাবি করা হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে ডিআরআই-এর দাবি, পুরো ঘটনার পেছনে আর্ন্তজাতিক সোনা চোরাচালান চক্রের যোগ রয়েছে। উদ্ধার হওয়া সোনার বাটগুলির কোনটির গায়ে মেড ইন সুইৎজারল্যান্ড, কোনটির গায়ে মেড ইন ইউএসএ লেখা রয়েছে। চিন থেকে নেপাল হয়ে সোনাগুলি এ দেশে ঢুকেছিল বলে তদন্তে জেনেছে ডিআরআই। সোনার বাটগুলি ৯৯ শতাংশ খাটি বলে দাবি গোয়েন্দাদের।