বৃষ্টি হলেই রাস্তা বদলাচ্ছে পুকুরে, উদ্বেগে নিত্যযাত্রী থেকে বাসিন্দারা

কোথাও বৃষ্টি হলেই খানাখন্দে ভরা রাস্তা নদীর চেহারা নিচ্ছে। কোথাও আবার গর্তে ভরা রাস্তা ছোটোখাটো পুকুরের চেহারা নিচ্ছে। নৌকোর মতো দুলুনিতে চমকে উঠছেন যাত্রীরা। আতঙ্কে কান্নাকাটি জুড়ছে ছোটরা। বর্ষার মুখে কোচবিহার জেলাজুড়ে অন্তত ১৬টি রাস্তা এমনই বেহাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৫ ০৪:১০
Share:

এমনই বেহাল হয়ে পড়েছে কোচবিহারের বিভিন্ন রাস্তা। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে তোলা নিজস্ব চিত্র।

কোথাও বৃষ্টি হলেই খানাখন্দে ভরা রাস্তা নদীর চেহারা নিচ্ছে। কোথাও আবার গর্তে ভরা রাস্তা ছোটোখাটো পুকুরের চেহারা নিচ্ছে। নৌকোর মতো দুলুনিতে চমকে উঠছেন যাত্রীরা। আতঙ্কে কান্নাকাটি জুড়ছে ছোটরা। বর্ষার মুখে কোচবিহার জেলাজুড়ে অন্তত ১৬টি রাস্তা এমনই বেহাল। যার জেরে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে জেলার বিভিন্ন রুটে দুর্ঘটনাও ঘটছে আকছার। অভিযোগ, তার পরেও ওই সব রাস্তার হাল ফেরান হচ্ছে না। ফলে ভরা বর্ষায় ওই সব রাস্তাগুলি পুরোপুরি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গোটা ঘটনায় নিত্যযাত্রীদের পাশাপাশি ক্ষোভে ফুঁসছেন জেলার বাস মালিক সংগঠনকর্তারাও। ওই ইস্যুতে এলাকা ভিত্তিক আন্দোলনের প্রস্তুতিও হচ্ছে।

Advertisement

বাসিন্দাদের অভিযোগ, ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পুন্ডিবাড়ি থেকে বক্সিরহাট এলাকা পর্যন্ত রাস্তা বিক্ষিপ্ত ভাবে ভেঙে গিয়েছে। চিলাখানা, মারুগঞ্জ, লাঙলগ্রাম, হরিপুর চৌপথী ও সংলগ্ন এলাকায় পিচ,পাথর উঠে গিয়েছে। গোটা রাস্তা ভরে গিয়েছে অজস্র ছোটবড় গর্তে। ফলে বৃষ্টি হলেই জল জমে থাকছে। তুফানগঞ্জের হরিপুর মোড় হয়ে রসিকবিল-কামাক্ষ্যাগুড়ি রাস্তার অবস্থাও প্রায় এক রকম। জেলা পরিষদের তৈরি ওই রাস্তার বিভিন্ন অংশে পিচের চাদর প্রায় উঠে গিয়েছে। রাস্তা জুড়ে তৈরি হওয়া গর্তে জল জমে পুকুরের চেহারা নিচ্ছে। যানবাহন যাতায়াতের সময় কাছাকাছি থাকলে সাধারণ পথচারীদের ওই খানাখন্দের জলে ভিজতে হচ্ছে।

দিনহাটার নাজিরহাট-শালামারা রাস্তার অবস্থা তার চেয়েও খারাপ। নাজিরহাট বাজার লাগোয়া এলাকায় প্রায় এক কিনোমিটার এলাকাজুড়ে বৃষ্টিতে ওই রাস্তা ছোটখাটো নদীর চেহারা নিচ্ছে। লাঙলগ্রাম-বালাভূত, তুফানগঞ্জ-তল্লিগুড়ি, কোচবিহার সদরের সুটকাবাড়ি-ফাঁসিরঘাট, দেওয়ানহাট-নাজিরহাট, দেওয়ানহাট-নাককাটি, কোচবিহার-ঢাংঢিংগুড়ি, কোচবিহার-পেস্টারঝাড়, কোচবিহার-চকচকা, কোচবিহার-খাপাইডাঙা, মাথাভাঙার বেলতলা- হাসানেরঘাট, গোলকগঞ্জ-কুর্শামারী, জোরপাটকি-বোচাগাড়িরহাট, শিবপুর-ডাকঘড়া রাস্তার অবস্থাও রীতিমতো বেহাল। নাটাবাড়ির বিধায়ক তথা প্রাক্তন পূর্ত পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বলেন, “ বর্ষার মরসুমে রাস্তাঘাট বেহাল হয়ে পড়ার সমস্যা নতুন নয়। এ বারের কিছু এলাকায় ওই সমস্যা হয়েছে। বর্ষা পেরোলেই সংস্কার কাজ হবে।”

Advertisement

আশ্বাস দিয়েছেন জেলা পরিষদ থেকে পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারাও। কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া বলেন, “ইতিমধ্যে একাধিক রাস্তা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অন্য বেহাল রাস্তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।”কোচবিহার ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ খোকন মিঁয়া বলেন, “আমাদের এলাকায় পঞ্চায়েত সমিতির আওতাধীন সমস্ত বেহাল রাস্তা সারানর পরিকল্পনা হয়েছে। বৃষ্টির জন্য কয়েকটির কাজ শুরুতে সমস্যা হচ্ছে।”

এ সবের পরেও অবশ্য উদ্বেগ কমছে না বাসিন্দাদের। নিশ্চিত হতে পারছেন না নিত্যযাত্রীরাও। কোচবিহার জেলা মিনিবাস মালিক সমিতির সহকারী সম্পাদক সন্তোষ সাহা বলেন, “জেলাজুড়ে ১৫টির বেশি রুটের রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা দরকার। না হলে ভরা বর্ষায় বাস চলাচল চালু রাখা নিয়েই সমস্যা তৈরি হতে পারে।”

দিনহাটার ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা আবদুর রউফ বলেন, “ বহু বলেও নাজিরহাট-শালমারা রাস্তার হাল ফেরান সম্ভব হয়নি। আমরা ওই রাস্তা সহ অন্যসবগুলির হাল ফেরাতে আন্দোলনে নামব।” মাথাভাঙার তৃণমূল নেতা আলিজার রহমান জানান, আমলাদের একাংশের গড়িমসিতে সংস্কার নিয়ে কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। কাজ না হলে আন্দোলন হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন