দক্ষিণ ২৪ পরগণার বাসন্তীর পর মালদহের বৈষ্ণবনগর। ফের দুষ্কৃতীদের লড়াইয়ের মাঝে পড়ে প্রাণ খোয়াতে হল এক কিশোরকে।
রবিবার বিকেলে গাড়ি বিক্রি নিয়ে দু’পক্ষের বিবাদকে কেন্দ্র করে বোমাবাজি শুরু হয় বৈষ্ণবনগর থানার নন্দলালপুর গ্রামে। আর তার মাঝে পড়েই মৃত্যু হল নিরীহ কিশোর সাবিউল মিয়াঁর(১৭)। ওই ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্তরা এখনও অধরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত সাবিউলের বাবা সিন্টু মিয়াঁ চা বিক্রেতা। বাবার সঙ্গেই চায়ের দোকানে কাজ করত সাবিউল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এ দিন বিকেলে দু’দল দুষ্কৃতীর মধ্যে বোমাবাজি চলার সময় বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিল সাবিউল। আচমকা একটি বোমা তার উপরে এসে পড়ে। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে সে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সন্ধে ছ’টা নাগাদ সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে কলকাতায় রেফার করেন। নিয়ে যাওয়ার পথে কালিয়াচকের কাছে মৃত্যু হয় সাবিউলের।
বাসিন্দারা জানান, ওই গ্রামের সফিক মিয়াঁর একটি ট্যাক্সি রয়েছে। সেই ট্যাক্সি কেনার জন্য সপ্তাহ খানেক আগে সফিককে দু’হাজার টাকা বায়না দেন গ্রামেরই যুবক সাদ্দাম শেখ। অভিযোগ, সাদ্দামের কাছে বায়না নেওয়ার আগেই গাড়িটি অন্য জায়গায় বিক্রি করে দিয়েছিলেন সফিক। এ দিন বিষয়টি জানতে পেরে টাকা ফেরতের জন্য সফিকের বাড়িতে যান সাদ্দাম। তখন দলবল নিয়ে তাঁর উপর চড়াও হয় সফিক। শুরু হয় সংঘর্ষ। মুহুর্মুহু বোমা পড়তে থাকে। আর তারই মাঝে পড়ে গিয়েছিল নাবালক সাবিউল।
তার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আট ভাই-বোনের মধ্যে সাবিউল চতুর্থ। গ্রামের স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে সে। তারপর অভাবের কারণেই স্কুল ছে়ড়ে বাবার চায়ের দোকানে কাজ শুরু করেছিল। সিন্টু মিঁয়া বলেন, ‘‘আমার ছেলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের লড়াইয়ে মরতে হল আমার ছেলেকে।”
মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(গ্রামীণ) দীপক সরকার বলেন, “ওই ঘটনায় সফিকুল শেখ নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।” সোমবার ধৃত সফিকুলকে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
ভগবানপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূল নেতা মোস্তাক শেখ বলেন, “ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। পুলিশকে বলা হয়েছে যাতে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হয়।”
শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগণার বাসন্তীতে দু’দল দুষ্কৃতীর লড়াইয়ের মাঝে পড়ে গুলিতে মৃত্যু হয় এক কিশোরের।