সারা উত্তরবঙ্গ জুড়েই বসানো হচ্ছে রেলের জোড়া বা ডবল লাইন। পাশাপাশি দু’টি লাইন, যাতে একই সঙ্গে আপ ও ডাউন ট্রেন যাতায়াত করতে পারে। উত্তরবঙ্গ থেকে অসম পর্যন্ত রেল যোগাযোগে সেই লাইন বসানোর কাজ করতে অন্তত ১১ দিন লাগবে। শনিবার থেকে কাজ শুরু হবে। সে কারণে এই সময়ের জন্য সাতাশটি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে, সাঁইত্রিশটি ট্রেনের পথ বদলে যাচ্ছে। পথ বদলাবে নয়াদিল্লি-ডিব্রুগড় রাজধানী এক্সপ্রেসেরও। রেলের দাবি, ভবিষ্যতে যাত্রী পরিষেবা বাড়াতেই আপাতত কয়েকদিনের জন্য এই দুর্ভোগ সইতে হবে।
উত্তরবঙ্গ জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় সিঙ্গল বা একটি লাইন। তাতে একটি ট্রেন গেলে, অন্যটি যাওয়ার সুযোগ পায়। তাই আগের ট্রেনকে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে অনেক ট্রেনকে কোনও না কোনও স্টেশনে থেমে থাকতে হয়। এই বিপত্তিই এড়াতেই ডবল লাইনের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। তাতেই বাতিল হচ্ছে কলকাতা-হলদিবাড়ি ইন্টারসিটি, গুয়াহাটি-কলকাতা গরিব রথ সহ একাধিক ট্রেন। অনেক ট্রেনের পথ বদলাচ্ছে।
শিলিগুড়ি জংশন থেকে কোচবিহার, অসম যাওয়ার ডেমু ট্রেনগুলি বাতিল হচ্ছে শনিবার থেকেই। শিলিগুড়ি জংশন থেকে বামনহাট, দিনহাটার মতো কয়েকটি প্যাসেঞ্জার ট্রেনও শনিবার থেকেই বাতিল করা হয়েছে।
তারপরে ২৬ এবং ২৭ মার্চ দু’দিন নিউ আলিপুরদুয়ার থেকে ঘোকসাডাঙা পর্যন্ত ৪১ কিলোমিটার পথে ডবল লাইনের কাজ চলবে। দু’দিন ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। সেই চাপ সামলাতেই আগামী ২৫ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত রাজধানী সহ একাধিক ট্রেনের পথ বদলানো হয়েছে। শামুকতলা রোড থেকে আলিপুরদুয়ার, শিলিগুড়ি জংশন হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি রেলপথে দু’দিন চলবে রাজধানী। বাতিল হয়েছে পদাতিক, হলদিবাড়ি-কলকাতা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস সহ বহু ট্রেন।
রেল সূত্রের খবর, নিউ আলিপুরদুয়ার থেকে ডবল লাইন পাতার কাজ প্রায় শেষের পথে। লাইনের সঙ্গে সিগন্যাল জোড়া হবে। তবে তার আগে এখন যে সিগন্যাল ব্যবস্থা রয়েছে সেগুলো খুলে ফেলতে হবে। সেই কাজ করার জন্যই দু’দিন ওই পথে ট্রেন চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ-অসম যোগাযোগের মূল লাইনে কাজ হবে। ওই লাইন দিয়ে দিনে গড়ে প্রায় ৭০টি ট্রেন চলাচল করে। সব ট্রেনকে ঘুরপথে চালানো সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে কিছু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। কিছু ট্রেনের যাতায়াত নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। আশা করছি যাত্রীদের সহযোগিতা পাব।’’
ডবল লাইনের কাজ দীর্ঘ দিন ধরেই চলছিল। এক থেকে পাঁচ কিলোমিটার লাইন বেছে কাজ চলছিল। তবে এবারে পুরো ৪১ কিলোমিটার পথে একসঙ্গে কাজ চলছে। এই তৎপরতার নেপথ্যে রয়েছে রেলের কড়া নির্দেশ। এক বছর সময়সীমা দিয়ে তার মধ্যেই নিউ জলপাইগুড়ি থেকে অসম পর্যন্ত সব অংশে ডবল লাইন পাতার কাজ সেরে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।