সোনা-কাণ্ডে ওড়িশা থেকে পাকড়াও পাঁচ

পুলিশ সূত্রের খবর, গত তিনদিন ধরে ওড়িশার ভুবনেশ্বর, সম্বলপুর, রেরাখোল ও মাওবাদী অধ্যুষিত সুন্দরগড়ে তল্লাশি করে পাঁচজনকে ধরা হয়। ওড়িশা পুলিশের স্পেশাল টাক্স ফোর্সের সঙ্গে রাজ্য পুলিশের শিলিগুড়ির দল অভিযান চালিয়েছে।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৬:৪০
Share:

প্রতীকী চিত্র।

শহরের বর্ধমান রোডে সোনা বন্ধক রেখে ঋণ দেওয়া সংস্থার ডাকাতির ২৬ দিন পরে ওই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করল শিলিগুড়ি পুলিশ। ওড়িশা থেকে ওই পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ, শনিবার সকালে অভিযুক্তদের নিয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছনোর কথা কমিশনারেটের বিশেষ তদন্তকারী দলের। পুলিশ সূত্রের খবর, গত তিনদিন ধরে ওড়িশার ভুবনেশ্বর, সম্বলপুর, রেরাখোল ও মাওবাদী অধ্যুষিত সুন্দরগড়ে তল্লাশি করে পাঁচজনকে ধরা হয়। ওড়িশা পুলিশের স্পেশাল টাক্স ফোর্সের সঙ্গে রাজ্য পুলিশের শিলিগুড়ির দল অভিযান চালিয়েছে।

Advertisement

শনিবার বিকেলের পরে অভিযুক্তদের ভুবনেশ্বর আদালতে তুলে ট্রানজিট রিমান্ডে শিলিগুড়ি আনা হচ্ছে। গভীর রাতেই অভিযুক্তদের নিয়ে ভুবনেশ্বর থেকে গুয়াহাটি পৌঁছেছে পুলিশের বিশেষ দলটি। আজ, শনিবার সকালে গুয়াহাটি থেকে তাঁদের বাগডোগরা আসার কথা। রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানান, টানা প্রায় একমাস ধরে বিহার, ওড়িশায় তল্লাশি চালানোর পরে অভিযুক্ত পাঁচজনের হদিশ মিলেছে। ধৃতদের থেকে কী কী উদ্ধার হয়েছে তা পরে জানানো হবে।

গত ২৪ অগস্ট ভর দুপুরে আগ্নেয়ান্ত্র নিয়ে জনা পাঁচেকের দুষ্কৃতী দলটি বর্ধমান রোডের সংস্থাটিকে হানা দেয়। দুই জনকে মারধর, রক্তাক্ত করে কয়েক কোটি টাকার সোনা নিয়ে পালায়। অধিকাংশের মুখ হেলমেটে ঢাকা থাকলেও দুটি বাইক এবং একটি গাড়ির সন্ধান সিসিটিভির মাধ্যমে পান তদন্তকারীরা। সেগুলি নম্বর প্লেট অবশ্য ভুয়ো ছিল। পরবর্তীতে কয়েকটি মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলটি অভিযানে নামে। বাগডোগরার যে বাড়িতে সেনা বাহিনীর চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার নাম করে দুষ্কৃতীরা ঘাঁটি গেড়েছিল। সেখান থেকেও কিছু সূত্র পেয়েছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

কমিশনারেটের অফিসারদের একাংশ জানাচ্ছেন, গোটা দলটি প্রশিক্ষিত এবং দাগি। বিহার, ঝাড়খন্ড, ওড়িশায় দলটির একাধিক ঘাঁটি রয়েছে। পুরনো অপরাধের অভিযোগও মিলেছে। ওড়িশায় দলটির সদস্যদের উপস্থিতির প্রমাণ মেলার পরেই রাজ্য পুলিশের তরফে ওড়িশা পুলিশকে বিস্তারিতভাবে সব জানানো হয়। পুরী, সম্বলপুর, ভুবেনেশ্বর, বালাসোর, রেরাখোলের মত এলাকায় স্থানীয় থানার সাহায্য নেওয়া হয়। কিন্তু সুন্দরগড়ের মত এলাকা হওয়ায় ওড়িশা পুলিশের তরফেই পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে বিশেষ সতকর্তার জন্য বলা হয়। পরে, দুই রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তাদের আলোচনার পরে শিলিগুড়ি পুলিশের সঙ্গে ওড়িশার স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপের সদস্যরা অভিযান চালান।

গত তিনদিন ধরেই একাধিক অফিসারের নেতৃত্বে বিভিন্ন গ্রাম, লোকালয়, হোটেল ও জঙ্গল লাগোয়া বস্তিগুলিতে তল্লাশি শুরু হয়। সেখানে মোবাইলের নেটওয়ার্কের কিছু সমস্যা থাকায় যোগাযোগের জন্য তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। প্রথম সাফল্য মেলে ভুবনেশ্বরের একটি বাড়িতে। তার পরে দফায় দফায় গত ৭২ ঘন্টায় টানা তল্লাশির পরে অভিযানে বাকি চারজন ধরা পড়েছে। ৪৮ কেজি লুট করা সোনা দুষ্কৃতীরা ভাগ করে দফায় দফায় বিক্রির ছক কষে বলে তদন্তকারীরা জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন