পরীক্ষা দিতে আসছে দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীরা। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
প্রতিবন্ধকতা হারাতে পারেনি ওদের। দৃষ্টিহীন হলেও শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই প়ড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা।
ওরা হল কোচবিহার টাউন হাইস্কুলের পাঁচ ছাত্র নাম ভজন দে, স্বপন রায়, শাহজাহান মন্ডল, রবিচাঁদ বর্মন ও অর্জুন সরকার। বুধবার কোচবিহার শহর লাগোয়া বাবুরহাটের শ্রীরামকৃষ্ণ বয়েজ হাইস্কুলে ‘রাইটার’ নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন ওই পাঁচ পড়ুয়া।
অর্জুনের বাড়ি জলপাইগুড়ির মালবাজারে, মালবাজারে। রবিচাঁদ বক্সিরহাটের বাসিন্দা, স্বপনের বাড়ি দিনহাটার জামাদরবসে। শাহজাহান তুফানগঞ্জের ছাতোয়া গ্রামে ও ভজন কোচবিহার সদরের ঘুঘুমারির বাসিন্দা। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি আর্থিক অনটনও রয়েছে ওই পাঁচজনের পরিবারে। শুধু মনের জোর, অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরেই পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে তারা। তাদের পড়াশোনার এই আগ্রহের প্রশংসা করেছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কোচবিহারের প্রতিনিধি মিঠুন বৈশ্য। তিনি বলেন, ‘‘পরীক্ষা দিতে যাতে ওদের কারও এতটুকু সমস্যা না হয় সেদিকে বাড়তি নজর রাখা হচ্ছে।”
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোচবিহার ব্লাইন্ড স্কুলের ছাত্র ছিলেন ওই পাঁচজন। নবম শ্রেণিতে তারা কোচবিহার টাউন হাইস্কুলে ভর্তি হয়। ব্লাইন্ড স্কুলের আবাসন থেকেই যাতায়াত করত তারা। স্বপনদের টেস্টের ফলও ভাল হয়েছিল বলে জানান কোচবিহার টাউন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থসারথি রায়। তিনি জানান, স্কুলের তরফে তাদের পড়াশোনায় যথাসাধ্য সাহায্য করা হয়েছে। এ দিন তাদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনোর জন্য স্কুলের তরফেই ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
ভজনের বাবা বেতের কারিগর। সে বলে, ‘‘মাধ্যমিকে বসাটা একটা পর্বমাত্র। আরও এগোতে হবে।’’ আরেক পরীক্ষার্থী শাহজাহানের বোনও দৃষ্টিহীন। পরিবারকে দেখার জন্যই নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায় সে।