হোম থেকে পালাল পাঁচ কিশোরী

প্রথমে শিল নোড়া দিয়ে ভাঙা হয় দরজার তালা। তারপর রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় ছাদ থেকে চাদর বেয়ে নিচে নেমে হোম থেকে পালাল পাঁচ আবাসিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ০২:১৩
Share:

প্রথমে শিল নোড়া দিয়ে ভাঙা হয় দরজার তালা। তারপর রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় ছাদ থেকে চাদর বেয়ে নিচে নেমে হোম থেকে পালাল পাঁচ আবাসিক। বুধবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ মালদহের জেলা মহিলা আবাস থেকে একসঙ্গে পাঁচ কিশোরী পালিয়ে যাওয়ায় হোমের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার পরেই এলাকার বাসিন্দারা হোমে বিক্ষোভ শুরু করেন।

Advertisement

তাঁদের অভিযোগ, হোম কর্তৃপক্ষ আবাসিকদের উপরে অত্যাচার চালায়। এই নিয়ে প্রায়ই গোলমাল হয়। জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ এবং দাবিদাওয়া খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আবাসিকদের পালানোর বিষয় নিয়েও তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

ইংরেজবাজার শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর বালুরচর এলাকায় সমাজ কল্যাণ দফতরের ওই মহিলা আবাস। আবাসিক সংখ্যা ৭৭ জন। ইংরেজবাজার শহরের সুকান্ত মোড় থেকে মাস ছয়েক আগে হোমটি ওই এলাকায় স্থানান্তরিত করা হয়। সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ ছাদের দরজার তালা শিল নোড়া দিয়ে ভেঙে ফেলে তিন আবাসিক। তারপর দোতলার ছাদে উঠে বিছানার চাদর বেঁধে সানসেট বেয়ে এক এক করে নিচে নেমে যায় হোমের পাঁচ কিশোরী। আরও দুই আবাসিকও চাদর বেয়ে নামতে গিয়ে পড়ে যায়। তার জেরে শুরু হয়ে যায় হইচই। এরপরেই নিরাপত্তা রক্ষীরা ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে। কিন্তু ততক্ষণে পালিয়ে গিয়েছে বাকী পাঁচ জন। হোমেই প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয় জখম দুই আবাসিকের।

Advertisement

জানা গিয়েছে, পালিয়ে যাওয়া কিশোরীদের মধ্যে একজন বাংলাদেশের বাসিন্দা। বাকিরা দক্ষিণ দিনাজপুরের। ইংরেজবাজার থানায় পাঁচ কিশোরীর নামে নিখোঁজ ডায়েরি করেন হোম কর্তৃপক্ষ। মালদহের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান চৈতালী ঘোষ সরকার বলেন, ‘‘পুলিশের পাশাপাশি ওই পাঁচ কিশোরীর বাড়িতেও খবর দেওয়া হয়েছে। কেন হোম থেকে কিশোরীরা পালাল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

এ দিন স্থানীয় বাসিন্দারা হোম কর্তৃপক্ষকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, হোমের মধ্যে মেয়েদের নির্যাতন করা হয়। যার জন্য রাত বিরেতেও হোম থেকে চিৎকার ভেসে আসত। হোমটি এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছে বলেও অভিযোগ। তাই এলাকা থেকে দ্রুত হোম সরানো না হলে আগামীতে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের নামবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। প্রশাসনের দাবি, ‘‘নতুন হোম তৈরির কাজ চলছে। খুব শীঘ্রই হোম স্থানান্তরিত করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন