মাসে পাঁচ হাজার, সঙ্কটে মিড-ডে মিল

এমনিতেই মিড-ডে মিল রান্নার জন্য প্রশাসনের তরফে নিয়মিত টাকা আসে না বলে অভিযোগ আছে। তার উপরে মিড-ডে মিলের জন্য মাসে পাঁচ হাজার টাকার বেশি দেওয়া হবে না বলে দাবি করল একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৩১
Share:

এই চেক ঘিরেই বিতর্ক। — নিজস্ব চিত্র

এমনিতেই মিড-ডে মিল রান্নার জন্য প্রশাসনের তরফে নিয়মিত টাকা আসে না বলে অভিযোগ আছে। তার উপরে মিড-ডে মিলের জন্য মাসে পাঁচ হাজার টাকার বেশি দেওয়া হবে না বলে দাবি করল একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। ফলে রান্না কার্যত বন্ধ হতে বসেছে চাঁচলের অনেক স্কুলে।

Advertisement

নোটের আকাল শুরু হওয়ার পরে টাকা তুলতে স্কুল ছেড়ে শিক্ষকদের অনেককেই ব্যাঙ্কে লাইন দিতে হচ্ছে। উপরন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের তরফে মিড-ডে মিলের অ্যাকাউন্ট থেকে মাসে পাঁচ হাজার টাকার বেশি দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়ায় প্রবল অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। চাঁচলের মহকুমাশাসক পুষ্পক রায় বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক এটা করতে পারে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি।’’

চাঁচলের পশ্চিম জালালপুর প্রাথমিক স্কুলের কথাই ধরা যাক। শুক্রবার সেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় স্কুলের অ্যাকাউন্ট থেকে মিড-ডে মিলের জন্য টাকা তুলতে গিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক।

Advertisement

গ্রাহকদের দু’হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে জেনে সেই পরিমাণ টাকা তুলতে চেয়ে চেক দেন তিনি। ভাবেন ধীরে ধীরে কয়েক দিনে অ্যাকাউন্ট থেকে বাকি টাকা তুলবেন। কিন্তু তাঁকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয় যে, এই অ্যাকাউন্ট থেকে মাসে পাঁচ হাজারের বেশি মিলবে না। চেকে তা লিখেও দেওয়া হয়।

ওই ব্যাঙ্কের জালালপুর শাখার ম্যানেজার সুনীল চৌধুরী দাবি করেন, ‘‘শুধু মিড-ডে মিল নয়। বেশ কিছু অ্যাকাউন্টে লেনদেনের ক্ষেত্রে উপর থেকেই কিছু নির্দেশ রয়েছে। আমরা সেটা মেনেই কাজ করছি।’’ যদিও মালদহের ব্যাঙ্কগুলির লিড ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার রবীন্দ্রনাথ শর্মা এ কথা জেনে অবাক। তিনি বলেন, ‘‘কোনও ব্যাঙ্ক এটা বলতে বা করতে পারে না। আমি খোঁজ নিচ্ছি।’’

স্কুলের তরফে বিষয়টি প্রশাসন, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদকে জানানো হয়েছে। একেই মিড-ডে মিলের জন্য বরাদ্দ টাকা নিয়মিত না আসায় কোথাও ধারদেনা করে, কোথাও শিক্ষকেরা নিজেদের টাকা দিয়ে ব্যবস্থা চালু রেখেছেন। তার উপরে এই নতুন উপসর্গ তৈরি হলে আর চালানো যাবে না, তাও প্রশাসনকে জানান তাঁরা।

ওই স্কুলে পড়ুয়া ৩০৬ জন। মিড ডে মিলের একমাসের টাকা পাঠানো হয়েছে জেনে শুক্রবার ব্যাঙ্কে যান প্রধানশিক্ষক উত্পল দাস। তিনি বলেন, ‘‘একজন গ্রাহক প্রতিদিন ব্যাঙ্কে লাইন দিয়ে দু হাজার টাকা পেতে পারেন। তা হলে মিড-ডে মিলের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে পৃথক নিয়ম কেন?’’ এই সমস্যার সমাধানের দিকেই এখন তাকিয়ে চাঁচলের বাকি স্কুলগুলিও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন