৯০০ কেজির তাম্রশিল্প মণ্ডপে

প্রায় ৯০০ কেজি তামার কারুকার্য দেখতে চাইলে এ বার কালীপুজোয় যেতেই হবে শিলিগুড়ির বিবেকানন্দ ক্লাবের (ভিএনসি) মণ্ডপে। চলতি বছরে দুর্গাপুজোয় যে মণ্ডপ কলকাতায় সাড়া ফেলে দিয়েছিল।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৬ ০২:০৫
Share:

তামার সাজে সাজছে ভিএনসি ক্লাবের মণ্ডপ। — নিজস্ব চিত্র

প্রায় ৯০০ কেজি তামার কারুকার্য দেখতে চাইলে এ বার কালীপুজোয় যেতেই হবে শিলিগুড়ির বিবেকানন্দ ক্লাবের (ভিএনসি) মণ্ডপে। চলতি বছরে দুর্গাপুজোয় যে মণ্ডপ কলকাতায় সাড়া ফেলে দিয়েছিল। দমদমের একটি ক্লাবের সেই পুজো মণ্ডপে উপচে পড়েছিল ভিড়। সেই ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ করে ৬৯ বছরে পা দেওয়া পুজোয় প্রায় আস্ত মণ্ডপই শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ায় বিবেকানন্দ স্কুলের মাঠে হাজির করছে ভিএনসি।

Advertisement

পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক গোবিন্দ বণিকের ধারনা, আবহাওয়া ঠিক থাকলে প্রাচীনকালী মিশর-রোমের তাম্রশিল্পের আদলে তৈরি ওই মণ্ডপ দেখতে ঠাসাঠাসি ভিড় হবে। ক্লাবের পুজো কমিটির আরেক সম্পাদক সৌরভ ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘তামার তার, তামার সূতো দিয়ে যে কারিকুরি হয়েছে তা দেখলে মন ভরে যায়। বাহারি আলোয় ওই মণ্ডপ দেখলে কখনও চোখ দাঁধিয়ে যাবে। আবার কখনও মনটা ভরে উঠবে।’’

ঘটনা হল কলকাতার দমদম পার্কের ওই তামার পুজো মণ্ডপ বানানো শুরু হয়েছিল গত ২০১৫ সালের নভেম্বরে। তা তৈরি হতে লেগে গিয়েছে প্রায় ১০ মাস। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে কাজ সমাপ্ত হলে তা জুড়ে তৈরি করা হয় ওই ক্লাবের মূল মণ্ডপ। কলকাতার একটি আর্ট কলেজের স্নাতক সন্দীপ সাহাই মণ্ডপের নকশা ও নির্মাণের কাজ করিয়েছেন। সন্দীপবাবু জানান, সুদূর অতীতে মিশরে ও রোমে তামার তার, সূতো দিয়ে নানা ধরনের কারুকার্য হতো। তামার তার দিয়ে তৈরি ওই সব শিল্পকর্ম ‘ফিলিগ্রি’ নামেই বেশি পরিচিত। ধীরে ধীরে তা বিশ্বের নানা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাচীন ভারতেও তা সমাদৃত হয়। ভারতের নানা এলাকায় তামার তৈরি ওই কারুশিল্প ‘তারকাশি’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। কিন্তু, নানা কারণে ধীরে ধীরে ওই শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। সন্দীপ বলেন, ‘‘লুপ্তপ্রায় ওই ফিলিগ্রি নিয়ে কাজের কথা ভাবছিলাম। তখনই নতুন ধরনের মণ্ডপ তৈরি প্রস্তাব পেয়ে কাজে নেমে গিয়েছিলাম।’’

Advertisement

বিপুল পরিমাণ তামা কেনা, কারিগরের মজুরি মিলিয়ে কত খরচ হয়েছে? সন্দীপবাবু জানান, তামার কেজি প্রতি বাজার দর দেখলে হবে না, জুড়তে হবে কারিগরদের মজুরিও। কারণ, অধিকাংশ সোনার দোকানের কারিগরদের দিয়ে তৈরি হয়েছে মণ্ডপের সাজসজ্জা। কোথাও বাহারি ময়ূর। আবার কোথাও পুজোর নানা উপকরণ। রয়েছে স্তম্ভ, ফুল সহ শৌখিন মনকাড়া সামগ্রীও।

সূত্রের খবর, কালীপুজোর পরে আস্ত মণ্ডপটি ফের হাতবদল করে দেওয়ার কথাও ভাবছেন উদ্যোক্তারা। আবার এমনও হতে পারে, ঘর সাজানোর জন্য যাঁরা আগ্রহী, তাঁদের কথা ভেবে প্রদর্শনী করে বিক্রির ব্যবস্থাও হতে পারে। তবে সৌরভ বলছেন, ‘‘আগে সকলে কালীপুজোটা উপভোগ করুন। বাকিটা পরে ভাবা যাবে। অনেক সময় আছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন