‘সিভিক কাকু’-র বাইকে চেপে অ্যাডমিট কার্ড এল লক্ষ্মীর

রায়গঞ্জের মাড়াইকুড়া হাইস্কুলের ছাত্রী লক্ষ্মী বর্মণের বাড়ি রায়গঞ্জ থানার বীরঘই পঞ্চায়েতের পিপলানে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:৫২
Share:

ত্রাতা: ‘সিভিক কাকু’-র সঙ্গে লক্ষ্মী। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

ভুল করে বাড়িতে অ্যাডমিট কার্ড ফেলে পরীক্ষাকেন্দ্রে চলে এসেছিল লক্ষ্মী। শেষ পর্যন্ত কর্তব্যরত এক সিভিক ভলান্টিয়ার তাকে মোটরবাইকে চাপিয়ে সাত কিলোমিটার দূরে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তার অ্যাডমিট কার্ড আনিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ রায়গঞ্জের দেবীনগর কৈলাসচন্দ্র রাধারানি বিদ্যাপীঠ পরীক্ষাকেন্দ্রের ঘটনার।

Advertisement

রায়গঞ্জের মাড়াইকুড়া হাইস্কুলের ছাত্রী লক্ষ্মী বর্মণের বাড়ি রায়গঞ্জ থানার বীরঘই পঞ্চায়েতের পিপলানে। রায়গঞ্জের মাড়াইকুড়া পঞ্চায়েতের অভোরের বাসিন্দা রহিমুল হক ট্র্যাফিক পুলিশের অধীনে কর্মরত রয়েছেন। এ দিন তিনি ওই পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে যান নিয়ন্ত্রণ ও পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরের এলাকার নজরদারির দায়িত্বে ছিলেন।

উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের দাবি, পুলিশকর্মীরা আইনশৃঙ্খলা ও যান নিয়ন্ত্রণের কাজ করার পাশাপাশি সামাজিক এমন বিভিন্ন কাজও করেন।

Advertisement

ওই পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রধান শিক্ষক উৎপল দত্তের বক্তব্য, ‘‘শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা শুরু হওয়ার মুখে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার ওই পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ড আনার ব্যবস্থা করেন। তার জন্যই ওই সে পরীক্ষায় বসতে সক্ষম হয়।’’

এ দিন বেলা ১২টা থেকে মাধ্যমিকের ইতিহাস পরীক্ষা ছিল। বেলা ১১টা নাগাদ লক্ষ্মী পিপলান থেকে একটি ট্রেকারে চেপে পরীক্ষাকেন্দ্রে আসে। ঢোকার মুখে সে স্কুলব্যাগ হাতড়ে বুঝতে পারে অ্যাডমিট কার্ড ব্যাগে নেই। এর পরেই পরীক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের সে অ্যাডমিট কার্ড না আনার বিষয়টি জানায়। তাঁরা ওই ছাত্রীকে জানিয়ে দেন, অ্যাডমিট কার্ড ছাড়া তাকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া সম্ভব নয়। তখনও পরীক্ষা শুরু হতে প্রায় এক ঘণ্টা বাকি রয়েছে। এর পরেই ওই ছাত্রী পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বাইরে বার হয়ে সামনের জাতীয় সড়কে যান নিয়ন্ত্রণ ও ওই এলাকার নজরদারির দায়িত্বে থাকা দুই সিভিক ভলান্টিয়ার তন্ময় সরকার ও রহিমুলকে বিষয়টি জানায়।

তন্ময় বলেন, ‘‘অ্যাডমিট কার্ডের অভাবে কোনও পড়ুয়া মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে পারছে না। এটা কোনও মতেই মানা সম্ভভ নয়। তাই সঙ্গে সঙ্গে রহিমুল তাকে বাইকে চাপিয়ে সাত কিলোমিটার দূরে বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়ি থেকে ওই ছাত্রী দ্রুত অ্যাডমিট কার্ড নেওয়ার পরে রহিমুল দ্রুত তাকে পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে নামিয়ে দেন। সাড়ে ১১টা নাগাদ অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে ওই ছাত্রী পরীক্ষা দিতে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকে যায়।’’

আর রহিমুল বলেন, ‘‘কর্তব্যের ফাঁকে সামাজিক কর্তব্য পালন করেছি। এ আর এমন কী কাজ!’’

লক্ষ্মীর কথায়, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়ার কাকুরা বাড়ি থেকে অ্যাডমিট কার্ড আনার ব্যাপারে আমাকে সাহায্য না করলে এ দিন পরীক্ষায় বসতেই পারতাম না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন