Cooch Behar

লড়াই ‘টাফ’, মত চা-চক্রের

আড্ডায় উঠে আসে প্রশ্ন— ত্রিমুখী লড়াইয়ে শেষ বাজি কে মারবে?

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:০১
Share:

ভোট-চর্চা: কোচবিহারে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামছে। ঠিক এই সময় থেকেই জমে ওঠে চা-চর্চা। ‘বাপি’র চায়ের দোকানে’ তো এক সন্ধ্যায় না গেলে অনেকেরই ভাতও হজম হয় না। গরম চায়ে একটা লম্বা চুমুক দিয়ে শ্রীহরি দত্ত বলে উঠলেন, “বুঝলে বাপিদা, তোমার এই চা না খেলে মনে হয় কী যেন একটা বাদ চলে গেল!’’ প্রশংসা শুনে লাজুক হাসেন বাপিদা। সামনেই এমজেএন স্টেডিয়াম। রাসমেলার মাঠ। তৃণমূল-বিজেপির পতাকা ঝুলছে মাঠের পাশেই। দূরে লাল আর হাত চিহ্ন আঁকা পতাকা জড়াজড়ি করে আছে। পাশ থেকে দীপায়ন পাঠক বলে উঠলেন, “ভোট তো চলেই এল। কে থাকছে, কে যাচ্ছে, কিছু বোঝা যাচ্ছে?” পাশ থেকে কল্যাণময় দাস ঘাড় নাড়েন, ‘‘সে ভাবে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে এ বারে টাফ লড়াই।”

Advertisement

ততক্ষণে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। একে একে ভরে উঠেছে বেঞ্চ। কয়েক জন দাঁড়িয়েই চায়ের কাপে চুমুক দিতে শুরু করেছেন। বাপিদার চায়ের কেটলি থেকে ধোঁয়া উঠছে। আর মাঝেমধ্যেই অর্ডার আসছে, ‘‘বাপিদা আর এক রাউন্ড চা দিও।’’ কেউ বললেন, “এ বারে ত্রিমুখী লড়াই। তিন জনেরই সুযোগ রয়েছে।” আবার এক জন বললেন, “দেখবেন, শেষপর্যন্ত ওই জোট আর ঘোট। একা একা কারও দম নেই।” কোচবিহার শহরের পূর্ত দফতরের মোড়ের কাছেই বাপি দে-র চায়ের দোকান। কাছেই জেনকিন্স স্কুল, এবিএনশীল কলেজ, মদনমোহন বাড়ি। শহরের আমজনতা তো বটেই, লেখক, চিত্রশিল্পী, নাট্যকারদের অনেকেও সেখানে সকাল-বিকেলে নিয়ম করে আড্ডা দেন। বড় কোনও দোকান নয়। ফুটপাতে একটি ছোট্ট ভ্যানগাড়িতেই বাপিদার চায়ের দোকান। সেখানেই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে আড্ডা।

ওই আড্ডাতেই নিয়মিত হাজির হন চিত্রশিল্পী শ্রীহরি দত্ত, লেখক দীপায়ন পাঠক, নাট্যকার কল্যাণময় দাসেরা। আর সেই আড্ডায় লেখা, সংস্কৃতি নিয়ে তো আলোচনা হয়ই। আর এখন আড্ডার অন্যতম বিষয় পুর-নির্বাচন। প্রাসঙ্গিক ভাবেই এ বারের পরিস্থিতি কী হতে পারে তা নিয়ে সকলেই নিজেদের মত জানান। আড্ডায় উঠে আসে প্রশ্ন— ত্রিমুখী লড়াইয়ে শেষ বাজি কে মারবে? চায়ে চুমুক দিতে দিতে জমে ওঠে আড্ডা। নাট্যকার দীপায়ন ভট্টাচার্য বলেন, “পানীয় জল নেই। একমাত্র বৈদ্যুতিকচুল্লির শ্মশান বেহাল। এ-সব যারা তা করতে পারবে তারাই ভোটে জিতবে।” এ সব শুনতে শুনতে মুখ খোলেন বাপিদাও, ‘‘যেই জিতুক আমার দোকানটা যেন থাকে!’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন