সঙ্কটে দিন কাটছে মৃত ছয় শ্রমিকের পরিবারের, ক্ষোভ

উত্তরপ্রদেশে কাজ করতে গিয়ে মাটি চাপা পড়ে মারা যান রায়গঞ্জ ও ইটাহারের ছয় শ্রমিক। সেই ঘটনার পর ছ’মাসেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:০০
Share:

দাবি: নাজিমুদ্দিনের স্ত্রী ফতেমা রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির স্থানীয় খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ আলতাব হোসেনকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও চাকরির দাবি জানাচ্ছেন। নিজস্ব চিত্র

উত্তরপ্রদেশে কাজ করতে গিয়ে মাটি চাপা পড়ে মারা যান রায়গঞ্জ ও ইটাহারের ছয় শ্রমিক। সেই ঘটনার পর ছ’মাসেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। কিন্তু সরকারি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ওই পরিবারগুলি এখনও পর্যন্ত সরকারি ক্ষতিপূরণ পাননি বলে অভিযোগ।

Advertisement

মৃত শ্রমিকদের পরিবারগুলি চরম আর্থিক সঙ্কটে রয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে মৃতদের পরিবারের একজন করে সদস্যের চাকরির দেওয়ারও দাবি উঠেছে। গত ২২ জানুয়ারি রায়গঞ্জের করোনেশন হাইস্কুলে রাজ্য শ্রম দফতরের উদ্যোগে শ্রমিক মেলার আয়োজন করা হয়। সেখানে ছিলেন রাজ্যের শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ও রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানি। ওইদিন রায়গঞ্জ থানার গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের এলেঙ্গিয়া এলাকার বাসিন্দা মৃত শ্রমিক নাজিমুদ্দিন হকের স্ত্রী ফতেমা খাতুন দুই মন্ত্রীর হাতেপায়ে ধরে ক্ষতিপূরণ ও চাকরির দাবি জানান। কিছুদিন আগে ফতেমা জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা ও রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির স্থানীয় তৃণমূলের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ আলতাব হোসেনের কাছেও লিখিত ভাবে ওই দাবি জানিয়েছেন।

জেলাশাসক জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আলতাবের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের পরিবহণমমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী মৃতদের পরিবারের লোকেদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও মৃতদের পরিবারের একজন করে সদস্যকে চুক্তিভিত্তিক চাকরি দেওয়ার চেষ্টা করছেন।’’

Advertisement

গত বছর ৩০ জুলাই রায় বরেলীতে প্রায় ২৫ ফুট গভীর গর্তে কেব্‌ল পাতার কাজ করছিলেন এ রাজ্যের কয়েকজন শ্রমিক। তখন মাটি চাপা পড়ে মারা যান ইটাহার থানার সুরুণ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাড়িওল এলাকার বাসিন্দা হাসান আলি, পাজল এলাকার বাসিন্দা কওসর আলি ও নাজিমুল হক। এছাড়া, রায়গঞ্জ থানার গোরি গ্রাম পঞ্চায়েতের এলেঙ্গিয়া এলাকার বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন হক, মহিরুল হক ও বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের ট্যাগরা এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হক (২৬) মারা যান।

নাজিমুদ্দিনের স্ত্রী ফতেমা জানান, সেই দুর্ঘটনার পর তৃণমূলের একাধিক নেতা, জনপ্রতিনিধি ও মন্ত্রী গোলাম রব্বানি প্রতি মৃতের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে সরকারি আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তিনি বা বাকি মৃত শ্রমিকদের কোনও পরিবারই ক্ষতিপূরণ পায়নি। তিনি জানান, সংসারে একমাত্র রোজগেরে স্বামীর মৃত্যুর পর পাঁচ বছরের ছেলে, দু’বছরের মেয়ে ও শাশুড়িকে নিয়ে চরম আর্থিক সঙ্কটে দিন কাটছে তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন