সদ্যোজাতের মৃত্যু, সুপারকে বিক্ষোভ

দিনরাতই হাসপাতালে রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। সদ্যোজাত শিশু মারা গিয়েছে সোমবার রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ। প্রায় ১৪ ঘণ্টা পরে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সেই খবর জানানো হয় তাদের। কেন এই বিলম্ব তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শিশুটির পরিবার। সোমবার জীবিত ওই সদ্যোজাতকে মৃত বলে পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছিল নার্স। তা নিয়ে হইচই পড়ে। শুরু থেকেই নার্স, চিকিৎসকদের গাফিলতি চলছে বলে পুলিশে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিবারের লোকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৬ ০১:৫৮
Share:

হাসপাতালে মৃত সদ্যোজাতের দেহ নিয়ে পরিজনেরা।

দিনরাতই হাসপাতালে রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। সদ্যোজাত শিশু মারা গিয়েছে সোমবার রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ। প্রায় ১৪ ঘণ্টা পরে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সেই খবর জানানো হয় তাদের। কেন এই বিলম্ব তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শিশুটির পরিবার। সোমবার জীবিত ওই সদ্যোজাতকে মৃত বলে পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছিল নার্স। তা নিয়ে হইচই পড়ে। শুরু থেকেই নার্স, চিকিৎসকদের গাফিলতি চলছে বলে পুলিশে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিবারের লোকেরা।

Advertisement

ঘটনায় সংশ্লিষ্ট নার্সদের কেন শো-কজ বা সাসপেন্ড করা হল না সেই প্রশ্ন তুলে শিলিগুড়ি হাসপাতালের সুপারের দফতরে গিয়ে এ দিন বিক্ষোভ দেখায় ডিওয়াইএফ ও এসএফআই। সে সময় সুপার ছিলেন না। মহকুমাশাসক পানিক্কর হরিশঙ্কর বিষয়টি জানতে সুপারের দফতরে গিয়েছিলেন। মহকুমা শাসকের সামনেই মৃত সদ্যোজাতের বাবা বিশ্বজিৎ দাস এবং পরিবারের অন্যরা অভিযোগ করেন সোমবার লেবার রুমে প্রসূতিকে মারধরও করা হয়েছে। এমন কী সদ্যোজাত বেঁচে রয়েছে জানার পরে পরিবারের লোকেরা তাকে সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিটে নিয়ে গেলে প্রথমে ভর্তি করা হয়নি। পরে চাপ দিতে ভর্তি করানো হয়।

অভিযোগ শুনে মহকুমাশাসক ডেকে পাঠালে সুপার অমিতাভ মন্ডল দফতরে পৌঁছন। তিনি জানান, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যেই তাঁরা রিপোর্ট দেবেন। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘হাসপাতালের তরফে খতিয়ে দেখার পাশাপাশি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককেও বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে বলবেন। নিয়ম মেনে সমস্ত কিছু করা হচ্ছে কি না তা দেখা হবে। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

সুপারকে ঘেরাও বাম ছাত্র-যুবদের।

মহকুমাশাসক চলে যাওয়ার পরেও সুপারকে ঘেরাও করে রাখেন ডিওয়াইএফ ও এসএফআই নেতা-কর্মীরা। সদ্যোজাতের মৃত্যুর জন্য যাঁরা দায়ী তাদের সরিয়ে তদন্তের দাবি জানান তারা। হাসপাতালে ডায়ালিসিস করাতে আসা এক প্রৌঢ়ের মৃত্যুর ঘটনাতেও সরব হন। পিপিপি মডেলে ডায়ালিসিস ইউনিট চলছে। অথচ সেখানে যথাযথ চিকিৎসা মিলছে না বলে অভিযোগ। সুপার এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে না পারলে তাকে পদত্যাগ করতে হবে বলে দাবি জানায় এসএফআই। ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি বিস্তারিত জানাবেন বলে সুপার আশ্বাস দিলে ঘেরাও ওঠে।

পরিষেবা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ উঠেছে এ দিনও। যেমন, টিকিয়াপাড়ার বাসিন্দা সাধনা সরকার নিজের সোনার অলঙ্কার বিক্রি করে চিকিৎসা খরচ জোগাড় করেছিলেন। সেই টাকা দিয়ে এ দিন সিটি স্ক্যান করাতে এসেছিলেন। কাউন্টারের সামনে এক ব্যক্তি হাসপাতালের কর্মী পরিচয় দিয়ে তাঁর কাছ থেকে ১২০০ টাকা এবং প্রেসক্রিপশন নিয়ে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। সুপারকে তা জানালেও তিনি কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিপাকে পড়েন ওই মহিলা।

ছিদাম মোদক নামে এক রোগী চিকিৎসার জন্য এলে তাঁকে গাইনোকোলজি বিভাগে পাঠানো হয় বলে অভিযোগ। সাড়ে ১১টা থেকে দু’টো পর্যন্ত দাঁড়িয়েও চিকিৎসককে দেখাতে পারেননি তিনি। এরপর মহকুমাশাসকের সামনে বিষয়টি বললে সহকারি সুপার গিয়ে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

খুশবু সাহানি নামে এক মহিলা ড্রেসিং করাতে যান। এ দিন কাউন্টারে লিঙ্ক নেই বলে তাঁকে বসিয়ে রাখা হয়। তাঁকে ভর্তি হতে বলা হয়। পরে যে চিকিৎসক দেখেছিলেন সে সময় ঘটনাচক্রে তিনি জরুরি বিভাগে এলে ব্যবস্থা করে দেন।

ছবি: সন্দীপ পাল

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন