পড়ার খরচ না পেয়ে আত্মঘাতী ছাত্রী, নালিশ

এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। ইংরেজবাজার থানার অমৃতির গৌরীপুর গ্রামে বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির শোয়ার ঘর থেকে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম ঝুমা মণ্ডল (১৮)। সে ইংরেজবাজারের রায়গ্রাম হাই স্কুলের ছাত্রী ছিল। এ বার দ্বিতীয় বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে সে। কলেজে ভর্তির জন্য টাকা না পেয়েই সে আত্মঘাতী হয়েছে বলে ওই ছাত্রীর বন্ধুদের অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৫ ০৩:০৫
Share:

এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। ইংরেজবাজার থানার অমৃতির গৌরীপুর গ্রামে বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির শোয়ার ঘর থেকে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম ঝুমা মণ্ডল (১৮)। সে ইংরেজবাজারের রায়গ্রাম হাই স্কুলের ছাত্রী ছিল। এ বার দ্বিতীয় বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে সে। কলেজে ভর্তির জন্য টাকা না পেয়েই সে আত্মঘাতী হয়েছে বলে ওই ছাত্রীর বন্ধুদের অভিযোগ। তবে থানায় এখনও কোনও নালিশ জানানো হয়নি। ঝুমার বাবা বিজয় মণ্ডল রাজ মিস্ত্রির কাজ করেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পারিবারিক বিবাদের জেরে বিজয়বাবুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী রূপালি মণ্ডল বছর পনেরো আগে আত্মহত্যা করেছিল। সেই সময় ঝুমার বয়স ছিল তিন বছর। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর বছর দুয়েকের মধ্যে ইংরেজবাজারের শোভাপুরের কালিন্দীর বাসিন্দা জ্যোৎস্না মণ্ডলের সঙ্গে বিয়ে হয় বিজয়বাবুর। তাঁদের একটি ছেলেও রয়েছে। সে নঘরিয়া হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশুনা করে। আর ঝুমা গ্রামের হাই স্কুল থেকে ২৯৩ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে পাশ করে কলেজে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সমস্ত কলেজে গত ১০ জুন থেকে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে। এর জন্য ১০০ থেকে ১৫০ টাকা করে লাগছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার ঝুমা তাঁর বাবার কাছ থেকে ফর্ম ফিলাপের জন্য টাকা চেয়েছিল। কিন্তু তা দিতে রাজি হননি তার বাবা মা। ঝুমার বন্ধুদের অভিযোগ এতে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল সে। এ ছাড়া তার বাবা মা ঝুমার বিয়ের চেষ্টা করছিল। তাতে ঝুমা রাজি না হওয়াতে তার উপরে অত্যাচার আরও বেড়ে যায়।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশও জানিয়েছেন, ঝুমার উপরে নানান কারণে অত্যাচার হত। গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্ক মেনে নেয়নি তার বাবা মা। অন্য জায়গায় তার বিয়ের চেষ্টা চলছিল। জ্যোৎস্নাদেবী বলেন, ‘‘আমি কোনওদিন তাকে সৎ মেয়ে হিসেবে মানুষ করিনি। পরিবারে মধ্যে এমন গোলমাল হয়ে থাকে।’’ ঝুমার বাবা বিজয়বাবু বলেন, ‘‘গ্রামের একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক হয়েছিল তার। সেই জন্য তাকে আমি আর পড়াতে চাইনি। পড়াশুনা না করিয়ে বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। গতকাল শহরে যাবে বলে জানিয়েছিল। আমি রাজি হয়নি। তবে এমন কাণ্ড ঘটাবে আমরা ভাবতে পারিনি।’’ পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,‘‘অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন