Ragging at NBU

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে মালদহ পুলিশের দল

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত বলেন, ‘‘পুলিশ এ দিন তদন্তে করতে এসেছিল।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু , অভিজিৎ সাহা

মালদহ, শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:৪০
Share:

—ফাইল চিত্র।

র‌্যাগিংয়ের শিকার হয়েই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের ছাত্র উত্তম মার্ডি আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছিল পরিবার। পুলিশে অভিযোগ জানানোর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তদন্তে হাজির হল মালদহ পুলিশের একটি দল। বুধবার গাজল থানার পাঁচ সদস্যের তদন্তকারী দলটি বেলা ১১টার পরে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছয়। ছাত্রটি যে ঘরে থাকতেন, বিদ্যাসাগর হস্টেলের সেই ১০৩ নম্বর ঘরে ঢুকে সমস্ত কিছু খুঁটিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। এ দিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুজোর ছুটি শুরু হয়েছে। সে কারণে পড়ুয়াদের অধিকাংশই বাড়ি চলে গিয়েছেন মঙ্গলবার বিকেলে। হস্টেলে উত্তমের ঘরে যে দু’জন থাকতেন, তাঁরাও বাড়ি গিয়েছেন। হস্টেল সুপারের কাছ থেকে তাঁদের ফোন নম্বর নিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত বলেন, ‘‘পুলিশ এ দিন তদন্তে করতে এসেছিল। তাদের সমস্ত রকম সাহায্য করা হচ্ছে। হস্টেল সুপার ছিলেন। পড়ুয়ারা পুজোর ছুটির পরে ফিরবেন। পুলিশ চাইলে, তখন কথা বলতে পারবে।’’ তবে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে উত্তম মার্ডির পরিবার। মৃতের জেঠা জোনাস মার্ডির ক্ষোভ, “ভাইপোর মৃত্যুর পরে তিন দিন কেটেছে। অথচ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সে ভাবে কোনও ব্যবস্থা নেননি। এমনকি, কমিটি গঠন করে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে না। ঘটনাটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গা-ছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছেন।” ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অবশ্য বলেন, ‘‘র‌্যাগিংয়ের কোনও তথ্য-প্রমাণ আমরা পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে অ্যান্টি-র‌্যাগিং কমিটির তরফে রিপোর্ট ইতিমধ্যেই পাঠানোও হয়েছে।’’

বিদ্যাসাগর হস্টেল থেকে বেরিয়ে তদন্তকারীরা লাগোয়া রামকৃষ্ণ হস্টেলে যান। সেখানে সিনিয়র ছাত্রেরাই মূলত থাকেন। পরিবারের দাবি, রাতে সেখানে উত্তমকে ডেকে ‘শারীরিক-মানসিক নির্যাতন’ করা হয়েছিল। ওই হস্টেলের অফিসঘরে বসেন পুলিশ আধিকারিকেরা। কিছু পড়ুয়া যাঁরা হস্টেলে ছিলেন, তাঁদের ডেকে ঘন্টাখানেক ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশের দলটি। পরে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিভাগ ‘ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ডে’ গিয়ে আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেন। সূত্রের দাবি, ছাত্র ভর্তির নথিপত্র যাচাই করেন তদন্তকারীরা। প্রয়োজন মতো সে সবের প্রতিলিপিও সংগ্রহ করেন। তদন্তের বিষয়ে পুলিশ আধিকারিকেরা এ দিন কিছু বলতে চাননি। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন,“তদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তদন্তকারী অফিসার গিয়েছেন। ঘটনার সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

Advertisement

পুলিশের দাবি, গাজলের কচুয়ার বাসিন্দা উত্তমের মৃত্যুর ঘটনায় হস্টেলের সিনিয়ারদের একাংশের বিরুদ্ধে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ করেছে পরিবার। উত্তমের ফোনের ‘কল রেকর্ড’ খতিয়ে দেখা হবে। ঘটনায় শিলিগুড়ি পুলিশেরও সাহায্য নেওয়া হবে। তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সী বলেন,“প্রয়োজনে আমাদের দলের প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যাবেন। কারণ, উত্তমের মতো ছাত্রের অকালমৃত্যু মানা যায় না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন