সভামঞ্চে: নাগরাকাটার সভায় সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
শুক্রা মুন্ডার নাগরাকাটায় ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করার কথা জানিয়ে গেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে বললেন, ‘‘নাগরাকাটা থেকে তৃণমূলের প্রার্থী যে-ই হোন না কেন, তাঁকে জেতালে নাগরাকাটার দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে নেব।”
যে শুক্রা মুন্ডাকে নিজে বাড়ি গিয়ে দলে জায়গা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তিনি সম্প্রতি দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। নাগরাকাটায় শুক্রার জন সংযোগ যে ভাল, সেটা স্থানীয় তৃণমূলের লোকজনও স্বীকার করেন। তার উপরে বিজেপি গত লোকসভা ভোটেই এই অঞ্চলে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছিল। শনিবার তাঁরই খাসতালুকে সভা করতে এসেছিলেন অভিষেক। এই সভা দল এবং তাঁর কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা বোঝাতে গিয়ে অভিষেক এ দিন বলেন, ‘‘কিষানদা (জেলা সভাপতি কৃষ্ণ কল্যানী), মিতালিদি (ধূপগুড়ির বিধায়ক মিতালি রায়), সৈকত (জলপাইগুড়ির যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়), খগেশ্বর রায়েরা (রাজগঞ্জের বিধায়ক) আমাকে বলেছিলেন, এখানে যেন সভা না করি। আমি বলেছি, দশ জন হলেও সভা করব। আমাকে দমিয়ে রাখা যাবে না।’’
দলের জেলা নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য, এই সভা সফল করতে গত কয়েক দিন ধরে মাটি কামড়ে পড়েছিলেন সবাই। এ দিন ভিড় দেখে স্থানীয় নেতৃত্ব সন্তুষ্ট। অভিষেকও বলেন, ‘‘আপনাদের চাষের খেতের পোকা অন্য খেতে চলে গিয়েছে। আপনারা খুশি তো?’’ জনতা তাঁকে চেঁচিয়ে বলেছে, খুশি। উপস্থিত মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত চিৎকার শুনে দৃশ্যত খুশি অভিষেক বলেন, ‘‘বিজেপি নেতৃত্বকে বলছি, এসে দেখে যান নাগরাকাটায়।’’ কোন ভূমিপুত্রকে এখান থেকে প্রার্থী করতে চায় তৃণমূল? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সঞ্জয় কুজুর নামে এক সমাজসেবীর দিকেই সম্ভবত ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন অভিষেক। অভিষেক আরও বলেন, “আপনাদের ভোট আপনারা কোথায় দেবেন, তা সম্পূর্ণ আপনাদের ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু মনে রাখবেন কেন্দ্রের সরকার ১৫ লক্ষ টাকা দেবে বলেও দেয়নি। অথচ, মমতা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা কাজেও করেছেন।’’
এই নিয়ে শুক্রার কোনও পাল্টা বক্তব্য মেলেনি। তবে জলপাইগুড়ির বিজেপি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেন, ‘‘তৃণমূলে সম্মান পাননি বলেই শুক্রা বিজেপিতে এসেছেন।’’ বিজেপির চা বলয়ের নেতা তথা আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা বলেন, “১০ বছর কাঁধ বাড়িয়ে দেবার কথা মনে ছিল না? এখন আর নাগরাকাটাকে কাঁধে নিতে হবে না। তার চেয়ে অভিষেক নিজেদের সরকারটাকে কাঁধে নিয়ে সাগরে ফেলে আসুন।”