হাতে টাকাও নেই জখম শ্রমিকদের

জম্মুতে আসার সময় গাড়ি উল্টে জখম হয়েছেন আট শ্রমিক। তাঁদের কাছে টাকাপয়সাও নেই। কয়েকটি কথা বলতেই ফোন কেটে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিশ্চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৯ ০৬:০৮
Share:

পরিজনদের খোঁজ নিতে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অপেক্ষা উদ্বিগ্ন পরিজনদের। নিজস্ব চিত্র

কয়েক দিন ধরে উদ্বেগেই ছিলেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে কাশ্মীরে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের পরিবার। এরই মধ্যে মঙ্গলবার এক শ্রমিক স্ত্রীকে টেলিফোন করে জানান, বাড়ি ফেরার সময় গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁদেরই আট সঙ্গী। তাঁদের কাছে আর একটি টাকাও নেই।

কয়েক সেকেন্ডের ওই ফোনের খবর হরিশ্চন্দ্রপুরের ৩২টি শ্রমিক পরিবার উদ্বেগে। কী করবেন, কোথায় যাবেন, তা ভেবে সারারাত চোখের পাতা এক করতে পারেননি তাঁরা। বুধবার সকালেই থানায় গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁরা। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি কয়েক ঘন্টার চেষ্টায় কাশ্মীর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওই শ্রমিকেরা আপাতত সুস্থ রয়েছেন বলে কাশ্মীর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।
হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি সঞ্জয়কুমার দাস বলেন, ‘‘কাশ্মীর পুলিশ হাসপাতালে খোঁজখবর নিয়ে আহত আট শ্রমিকের নামের তালিকাও পাঠিয়েছেন আমাদের। তাঁরা যাতে বাড়ি ফিরতে পারেন, সে জন্য আমাদের তরফে যতটুকু সম্ভব সবরকম সহযোগিতা করা হবে।’’
হরিশ্চন্দ্রপুরের নানারাহী, সাহাপুর এলাকার শতাধিক নির্মাণ শ্রমিক কাশ্মীরে থাকেন। যাঁরা শ্রীনগরের কাছাকাছি ছিলেন, তাঁদের অনেকেই ইদের আগে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু গত ৫ অগস্টের পর থেকে বারামুলা জেলার পাটনি এলাকার ৩২ জন শ্রমিকের সন্ধান পাননি তাঁদের পরিজনেরা। মঙ্গলবার শেখ বাবলু নামে এক শ্রমিকের ফোন পান তাঁর স্ত্রী। ল্যান্ডলাইন থেকে ফোনে তিনি জানান, বাড়ি ফিরবেন বলে জম্মুতে আসার সময় গাড়ি উল্টে জখম হয়েছেন আট শ্রমিক। তাঁদের কাছে টাকাপয়সাও নেই। কয়েকটি কথা বলতেই ফোন কেটে যায়। পরে ওই নম্বরে ফোন করে জানা যায় যে, সেটি একটি পর্যটন সংস্থার ফোন। শ্রমিকদের কেউ সেখানে নেই জানিয়ে ফোন কেটে দেওয়া হয়। এরপর এ দিন থানায় হাজির হন উদ্বিগ্ন পরিজনেরা।

জখমদের মধ্যে রয়েছেন নানারাহীর রেজাউল হক। তাঁর মা শাহাজাদি বেওয়া বলেন, ‘‘দুই ছেলেই কাশ্মীরে। তাদের খোঁজ নেই।’’ রেজাউলের আত্মীয় মাসুদ আলম বলেন, ‘‘বারবার ফোন করে অগোছালো ভাবে যেটুকু জেনেছি তা হল, ওঁদের কাজ নেই, ফলে টাকাও শেষ। তাই হয়তো ফোনও করতে পারছে না। কী ভাবে, কোথায় টাকা পাঠাব, সেটাও বুঝতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন