রুটি না, ভাত চাইছে নিস্পৃহ নির্মল

তিন জনকে রড দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে, কুপিয়ে খুনের অভিযোগে ধরার পড়ার পরেও অনুতাপের কোনও চিহ্ন নেই মালদহের নির্মল সিংহের চোখেমুখে। বরং, লক আপে থাকলেও রাতে রুটির বদলে ভাতই যে তাঁর বেশি পছন্দ, সেটা জানিয়ে দিচ্ছেন তিনি।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

মালদহ শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৬ ০৩:৩৫
Share:

তিন জনকে রড দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে, কুপিয়ে খুনের অভিযোগে ধরার পড়ার পরেও অনুতাপের কোনও চিহ্ন নেই মালদহের নির্মল সিংহের চোখেমুখে। বরং, লক আপে থাকলেও রাতে রুটির বদলে ভাতই যে তাঁর বেশি পছন্দ, সেটা জানিয়ে দিচ্ছেন তিনি। বেশ জোরের সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, ভাতই খাবেন। লক আপে বন্দি অন্য কারও সঙ্গে কথাও বলছেন না। সব সময় ভাবলেশহীন ভাবে সিলিঙের দিকে তাকিয়ে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। বাড়ির কেউ দেখা করতে যাননি তাঁর সঙ্গে। কোনও আইনজীবীও এখনও নেই তাঁর। শুধু তাই নয়, পুলিশের দাবি, জেরার মুখে স্বাভাবিক গলায় জানিয়ে দিচ্ছেন, কী ভাবে খুন করেছেন।

Advertisement

সোমবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপর থেকে সে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ লকআপেই রয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে অবশ্য কয়েক ঘণ্টার জন্য সিআইডির অফিসাররা তাঁকে জেরা করার জন্য নিজেদের দফতরে নিয়ে গিয়েছিলেন। সিআইডির নিজস্ব কোনও লকআপ নেই। সন্ধ্যায় ফের থানার লকআপেই তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয়।

মালদহ বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামপ্রকাশ গুপ্তা বলেন, ‘‘সস্ত্রীক খুন হওয়া রামরতন অগ্রবালের সঙ্গে অনেক আইনজীবীরই হৃদ্যতা ছিল। এ ছাড়া শহরের বুকে যে ভাবে তিন জনকে খুন করা হয়েছে, সেটা জানার পর বার অ্যাসোসিশনের কোনও সিদ্ধান্ত না থাকলেও আইনজীবীরা নিজেরাই দাঁড়াননি।’’ শহরের বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দা রামরতনবাবুকে গত বৃহস্পতিবার রাতে নিজের বাড়িতেই খুন করা হয়। তাঁর সঙ্গে খুন হন তাঁর স্ত্রী ও বাড়ির আর এক পরিচারকও। ওই তিনটি খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে ওই বাড়িরই প্রাক্তন পরিচারক নির্মল সিংহ ধরা পড়ে। ওই রাতেই রামরতনবাবুর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে নির্মলকে দিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করানো হয়।

Advertisement

সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন রাতে নির্মল দু’বার রামরতনবাবুর বাড়ির সামনে যান। প্রথমে একবার কলিং বেল বাজিয়ে চলে যান। তার ২০ মিনিট বাদে ফের কলিং বেল বাজান নির্মল। সেই সময় পরিচারক গণেশ রামকে জানানো হয়, ওই দিন রাতে তিনি বাড়িতে থাকবেন। পরিচারক গণেশ রাম আপত্তি করলে লোহার রড দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে খুন করা হয়। চিৎকার শুনে ঘর থেকে বের হন রামরতনবাবুর স্ত্রী মঞ্জু অগ্রবাল। তাঁকেও একই কায়দায় খুন করা হয়। মঞ্জুদেবীকে খুন করার সময়ই বাড়ি আসেন রামরতনবাবু। সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গিয়েছে, তিনি দশ মিনিট ধরে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। সেই সময় নির্মল মঞ্জুদেবীকে খুন করছিল বলে সিআইডি কর্তাদের জানিয়েছেন। তারপরই খুন করা হয় রামরতনবাবুকে। মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যেই তিনটি খুন করে নির্মল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন