বরো চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ নিয়ে শিলিগুড়ি পুরসভায় দলের পরিষদীয় দলনেতা সুজয় ঘটকের পাশে দাঁড়ালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। বুধবার কলকাতায় বৈঠকের পর সুজয়বাবুর সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলেন অধীরবাবু। এ দিন সুজয়বাবুর উপর তিনি কোনও নির্দেশ চাপিয়ে দেননি। বরং এ ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত সুজয়বাবুর ওপরেই ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।
সোমবার শিলিগুড়ির মেয়রের দফতরে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন সুজয়বাবু। মেয়র অশোক ভট্টাচার্য অবশ্য তা গ্রহণ না করে পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলেও জানান মেয়র। পদত্যাগ নিয়ে দলের নেতাদের একাংশ সুজয়বাবুকে কটাক্ষও করেন।
শিলিগুড়ির ঘটনা শুনে অধীরবাবু জানান, যেখানে দলের কাউন্সিলরদের বঞ্চনা করা হচ্ছে সেখানে কোনও আলোচনার প্রয়োজন নেই। গত সপ্তাহে পুরসভার বোর্ড মিটিঙে পূর্ত দফতরের কাজে যে ব্যয় বরাদ্দ হয়েছে তাতে কংগ্রেস কাউন্সিলরদের বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছিলেন সুজয়বাবু। কংগ্রেসের ৪ জন কাউন্সিলর থাকলেও তাঁদের ওয়ার্ডগুলিতে মাত্র ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অন্য দিকে ২ জন কাউন্সিলর নিয়ে বিজেপির ওয়ার্ডে বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা। সংখ্যালঘু বোর্ড চালাতে তৃণমূল-বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করে কংগ্রেসকে বঞ্চনা করা হচ্ছে বলে সুজয়বাবু অভিযোগ তোলেন। এ দিন বৈঠকের পরে সুজয়বাবু বলেন, ‘‘দলের কাউন্সিলরদের প্রতি পুরসভার বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় অধীরবাবু খুশিই হয়েছেন। দলকে জানিয়েই পদত্যাগের ইচ্ছেপ্রকাশ করেছিলাম। দল আমার সঙ্গে আছে।’’ পরে অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘সুজয় আমাকে বঞ্চনার অভিযোগ জানান। এমন বঞ্চনা হলে অবশ্যই এর প্রতিবাদ হওয়া উচিত।’’
বাম কাউন্সিলরদের সমর্থন নিয়ে সুজয়বাবু তিন নম্বর বোরো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি বাম পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলছিলেন। ফরওয়ার্ড ব্লকের এক কাউন্সিলরের তৃণমূলে যোগদান ও পুরসভার নির্দল কাউন্সিলর অরবিন্দ ঘোষের মৃত্যুর পরে বামেরা বোর্ডে সংখ্যালঘু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বরো চেয়ারম্যান পদ থেকে কংগ্রেস নেতা সুজয়বাবুর পদত্যাগের ইচ্ছে ঘিরে জল্পনা শুরু হয়। অতীতে বামেদের সমর্থন নিয়ে চেয়ারম্যান হওয়ায় সুজয়বাবুকে বিঁধেও বোর্ড গড়তে সুজয়বাবুর সমর্থন চেয়ে অনুরোধ করেন তৃণমূলের বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার।
সূত্রের খবর সুজয়বাবু প্রদেশ কমিটির সদস্য না হলেও তাঁকে মঙ্গলবার রাতারাতি কলকাতায় ডেকে পাঠান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।