‘সেভ গার্ল চাইল্ড’ স্লোগানকে সামনে রেখে কোচবিহারে ভ্রূণ হত্যার আশঙ্কা রুখতে অভিযানে নামছে প্রশাসন। শুক্রবার জেলাশাসকের দফতরের সভাকক্ষে বৈঠক হয়। জেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা ছাড়াও স্বাস্থ্য, সমাজ কল্যাণ দফতরের আধিকারিকেরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, জেলাজুড়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি সেন্টারগুলিতে অভিযান চালানোর পাশাপাশি নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
নতুন করে আল্ট্রাসনোগ্রাফি কেন্দ্র চালুর অনুমোদন দেওয়ার ব্যাপারেও সব দিক খতিয়ে দেখা হবে। জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “যাতে একটিও কন্যাভ্রূণ হত্যার ঘটনা না হয় সে জন্য বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। স্কুল, কলেজ স্তরের পড়ুয়াদের মধ্যেও কর্মসূচি নেওয়া হবে। নার্সিংহোম, আল্ট্রাসনোগ্রাফি কেন্দ্রগুলিতেও নিয়মিত পরিদশর্ন হবে।” প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, সারা দেশের সঙ্গে কোচবিহারেও পুরুষ ও স্ত্রীর আনুপাতিক সংখ্যা কমছে। ২০০১ সালের জনগণনার রিপোর্ট অনুযায়ী কোচবিহারে প্রতি এক হাজার পুরুষের অনুপাতে মহিলার সংখ্যা ছিল ৯৪৯ জন। এক দশকের ব্যবধানে ২০১১ সালে ওই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৯৪২ জন। জন্ম থেকে ছ’বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে একই সময়ে ওই আনুপাতিক হার কমেছে। এক হাজার ছেলে শিশুর নিরিখে কন্যা সন্তানের সংখ্যা ছিল ৯৬৪ জন। সেটাই কমে দাঁড়িয়েছে ৯৪৮ জন।
এই সংখ্যা কমে যাওয়ার নেপথ্যে চুপিসাড়ে মোটা টাকার বিনিময়ে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ, অবৈধ গর্ভপাতের মতো কারণ থাকার অভিযোগও রয়েছে। ওই অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিতে পারছেন না স্বাস্থ্য কর্তাদের অনেকে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আনুপাতিক হার কমে যাওয়ার পরিসংখ্যান যথেষ্ট উদ্বেগের। সমস্ত দিক থেকেই সতর্কতা বাড়ানর ব্যাপারেই জোর দেওয়া হচ্ছে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, গর্ভস্থ ভ্রূণ হত্যা প্রতিরোধক আইন বা পিসি অ্যান্ড পিএনডিটি আইন মেনে পদক্ষেপ করার ব্যাপারে বৈঠকে জোর দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্বাস্থ্য কর্তা জানান, গর্ভস্থ ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ করা যাবে না বলে সমস্ত কেন্দ্রে বোর্ড দেওয়া নিয়েও নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। জেলায় অনুমোদিত চালু আল্ট্রাসনোগ্রাফি ২০টি। পুরো নিয়ম মেনে ওই কেন্দ্র না চালানোয় দু’টি কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে। নতুন করে দু’টি কেন্দ্র চালুর আবেদন রয়েছে।