•অসহায়: পোড়া দোকানে শেষ সম্বলের খোঁজ। ছবি: সন্দীপ পাল
গত বছর এপ্রিল মাসের সেবক রোডের ঘটনা। রাতে শর্ট-সার্কিটে আগুন লেগে রাস্তার ধারের হোটেলের ভিতরেই দু’জন পুড়ে মারা যান। তার কিছু দিনের মধ্যে অক্টোবরে হায়দারপাড়ায় স্টিল আলমারির কারখানার আগুন ভয়াবহ আকার নেয়। পাশের বহুতলের বহু জানলা, গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাস দু’য়েক আগের সুভাষপল্লি বাজারে ভস্মীভূত হয় ৫টি দোকান। প্রতি ক্ষেত্রেই জনবহুল, ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলিতে আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলেও তদন্তে উঠে আসে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার ফাঁকফোকর।
পুরসভা, পুলিশ ও দমকল থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু, কাজের কাজ হয় না। কেন পুলিশ হাত গুটিয়ে থাকে, কেনই বা দমকল পদক্ষেপ করে না, কী জন্য পুরসভা পুলিশ-দমকলকে দোষারোপকে দায় এড়ায় তা নিয়ে নানা সন্দেহ দানা বাঁধছে শিলিগুড়িতে। বুধবার জ্যোতিনগরের ঘটনার পরেও পুলিশ-প্রশাসন হাত গুটিয়ে থাকলে সেই সন্দেহ আরও জোরদার হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। যে প্রতিষ্ঠানে বুধবার আগুন লেগেছে তার মালিকপক্ষ অবশ্য যথা সময়ে সব কাগজপত্র তাঁরা দেখিয়ে দেবেন বলে দাবি করেছেন। তবে এলাকার ব্যবসায়ীদের একাংশের সন্দেহ, গাফিলতি থাকলেও তার দায় এড়াতে নানা ‘বন্দোবস্ত’ হতে পারে। যদিও পুলিশের দাবি, যথাযথ ছাড়পত্র দেখাতে না পারলে মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।
এ দিন যেখানে আগুন লাগে তার পাশেই রয়েছে আইটিআই কলেজ ও আকাশবাণী। সেগুলির আবাসন ছাড়াও রয়েছে একাধিক বহুতল। বাসিন্দারা জানান, ওই কমপ্লেক্সে কাঠ, আসবাব, কার্টুন তৈরির কারখানা, শোরুম। মালিকদের নথি হয়তো সবই রয়েছে। কিন্তু এ দিন দেখা গেল, পাইপলাইন, জলাধার বা আগুন নেভানোর আধুনিক সরঞ্জাম কিছুই নেই। লাগোয়া শপিংমল থেকে লক্ষ লক্ষ লিটার জল দিয়েছে। বাসিন্দাদের বক্তব্য, ‘‘নইলে আগুন এলাকার ছড়াত।’’ বৃহত্তর শিলিগুড়ি নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক রতন বণিক বলেন, ‘‘সজাগ না হলে কোনও দিন আরও বড় বিপদ হবে।’’ সেবক রোড এলাকার বাসিন্দা তথা তৃণমূল নেতা মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘পুরসভা সব ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার পরেই শংসাপত্র দিলেই অনেকটা কাজ হতে পারে।’’